বকশীগঞ্জে দুই ইউপিতে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে প্রচারণা-প্রচারণা!

জিএম ফাতিউল হাফিজ বাবু, বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় দুই ইউপিতে প্রচার-প্রচারণা এখন তুঙ্গে। শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে বকশীগঞ্জ সদর ও বাট্টাজোড় ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন।

এখন পর্যন্ত কোথাও কোন সমস্যা হয় নি। ফলে সমানতালে প্রার্থীরা মাঠের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য প্রার্থীরা দিন রাত মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন। প্রত্যেক প্রার্থীই জনপ্রিয়তা যাচাইয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করছেন।

চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে বকশীগঞ্জ সদর ইউনিয়নে ৬ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বাট্টাজোড় ইউনিয়নে ৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১০২ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতায় অংশ নিয়েছেন। আগামী ২৬ ডিসেম্বর এই দুই ইউনিয়নে ভোট যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার শেষ মুহূর্তে বকশীগঞ্জ সদর ইউনিয়নে আলমগীর কবির আলমাছ নৌকা প্রতীক নিয়ে মাঠে ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি দলের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে রাত দিন ভোট সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সজ্জন ও দলের ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচিত আলমাছ সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম ভোটারদের সামনে তুলে ধরছেন। তিনি নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী বলে জানিয়েছেন সাংবাদিকদের।

এবারের নির্বাচনে চমক দেখাতে মাঠে নেমেছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু মোতালেব মন্ডল। বিশাল কর্মী বাহিনী ও এলাকার মানুষকে সাথে নিয়ে নেমেছেন ভোট যুদ্ধে। সাধারণ মানুষ ও ভোটারদের শোনাচ্ছেন আশার বাণী।

ইতোমধ্যে তিনি ভোটের মাঠে সাড়া ফেলেছেন তরুণ এই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী। আগামী নির্বাচনে তিনি জয়ী হতে তার মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ক্লান্তহীনভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

মাঠে রয়েছেন আরেক তরুণ প্রার্থী মো. সুমন। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন পুরো নির্বাচনী মাঠে। তার মরহুম বাবা সাবেক চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের সুনামকে কাজে লাগিয়ে ভোট চাচ্ছেন এই প্রার্থী।

বকশীগঞ্জ সদরে ঘোড়া প্রতীকে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন মহসিন আলী রিপন। তিনিও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

অটোগাড়ি প্রতীক নিয়ে বসে নেই স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। তিনিও তার কর্মীদের নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।

বাট্টাজোড় ইউনিয়নে পুরোদমে চলছে ভোটের আমেজ। দীর্ঘ ১০ বছর পর এই ইউনিয়নে নির্বাচন হওয়ায় এবার মানুষ অধির আগ্রহে বসে আছেন ভোট দেওয়ার জন্য। এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৭ জন প্রার্থী মাঠে রয়েছেন।

এবারের ভোটের মাঠে চমক দেখাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোখলেসুর রহমান জুয়েল তালুকদার। তালুকদার পরিবারের সন্তান জুয়েল তালুকদার সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন নৌকা প্রতীকে জয়লাভের জন্য। বাট্টাজোড় ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরাও নেমেছেন তার পক্ষে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বাট্টাজোড় ইউনিয়নে।

স্থানীয়ভাবে প্রচার-প্রচারণায় তিনি বেশ এগিয়ে রয়েছেন। পরিবারের সকলেই রয়েছেন নৌকার প্রচারণায়। ভোটের মাঠে তিনি এখন বিশাল ফ্যাক্টর বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটারগণ।

এর পাশাপাশি উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুর রউফ তালুকদার পারিবারিক কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জুয়েল তালুকদারের পক্ষে মাঠে নামায় পাল্টে যাচ্ছে ভোটের হিসাব নিকাশ। ফলে নির্বাচন ঘণিয়ে আসার সাথে সাথে নৌকার পাল্লা ভারি হচ্ছে এই ইউনিয়নে।

তবে নৌকার জয়ে বাধা হয়ে আছেন আরও ৬ স্বতন্ত্র প্রার্থী। নৌকার জয় ঠেকাতে ভিন্ন রাজনীতি চলছে এই ইউনিয়নে। প্রার্থী যেই হোক এই ইউনিয়নে আঞ্চলিকতা কাজ করছে ভোটারদের কাছে।

ভোটের মাঠে সাড়া ফেলেছেন জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের মো. মুছা মিয়া। ইতোমধ্যে ভোটের মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন এই প্রার্থী। জাতীয় পার্টির কর্মী ও এলাকার মানুষ রয়েছেন তার সাথে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর মো. জহির উদ্দিন এবার মাঠে নেমেছেন জোরেশোরে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পুরো বাট্টাজোড় নিয়ে মাঠে কাজ করছেন তিনি। প্রবীণ রাজনীতিবিদ মীর জহির চশমা প্রতীক নিয়ে ব্যাপক গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। বাট্টাজোড়বাসী তাকে নিয়ে এবার নতুন স্বপ্ন দেখছেন বলে জানিয়েছেন ভোটারগণ।

প্রচার-প্রচারণায় প্রতিটি এলাকাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন তিনি। এলাকার বয়োবৃদ্ধ ও শিশুদের সাথে সৌজন্যতাসহ মানুষের ভালবাসায় এগিয়ে যেতে চান তিনি।

আগামী নির্বাচনে চেয়ারম্যান হয়ে বাট্টাজোড়বাসীর সেবা করতে চান মীর মো. জহির উদ্দিন।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আমজাদ হোসেন এবারও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এর আগেও তিনি এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। পূর্বের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবারও যুদ্ধে নেমেছেন তিনি।

প্রচার-প্রচারণায় পিছিয়ে নেই নাজমুল হক ফরিদ। ইতোমধ্যে তিনি দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। শেষ চেষ্টা তিনিও করে যাচ্ছেন।

তবে ভোটারগণও অপেক্ষা করছেন তাদের পছন্দের প্রার্থীকে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী করতে। সার্বিক পরিস্থিতি ও জনপ্রিয়তা দেখে এবার সিদ্ধান্ত নেবে ভোটাররা।