জামালপুরে বীর বিক্রম শহীদ খুররমের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ

জামালপুরে বীর বিক্রম শহীদ খুররমের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর তার বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম : শেরপুর জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মোতাসিম বিল্লাহ খুররম বীর বিক্রম স্মরণে জামালপুর শহরের বেলটিয়ায় স্থাপিত বীর বিক্রম ‘শহীদ খুররম স্মৃতিস্তম্ভে’ ১০ ডিসেম্বর পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সদরুজ্জামান হেলাল বীরপ্রতিক এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইনজীবী মোহাম্মদ বাকী বিল্লাহ।

সকালে মুক্তিসংগ্রাম যাদুঘরের পক্ষে পরিচালক উৎপল কান্তি ধর এবং ট্রাস্টি হিল্লোল সরকার, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের পক্ষে সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন মাহমুদ এবং পরিবার ও শেরপুর মুক্তিসংগ্রাম যাদুঘর নেটওয়ার্ক কমিটির সভাপতি ডালিয়া সামাদ ও পরিবারের সদস্যরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর ‘বীর বিক্রম শহীদ খুররম স্মৃতিস্তম্ভ’ উদ্বোধন করা হয়। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর মুক্তি সংগ্রাম যাদুঘর-জামালপুর, বেলটিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও শহীদ খুররমের পরিবারবর্গের উদ্যোগে এই স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হয়।

বীর বিক্রম শহীদ খুররম স্মৃতিস্তম্ভ। ছবি : মাহমুদুল হাসান মুক্তা

এ উপলক্ষে বেলটিয়া শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতেই শহীদ বীর বিক্রম শাহ মোতাসিম বিল্লাহ খুররমের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বেলটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বীর বিক্রম শহীদ শাহ মোতাসিম বিল্লাহ খুররমের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক মুন্সি বীরপ্রতিক (বার)। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা খুররমের স্মৃতিচারণ করে আরও বক্তব্য রাখেন শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াস উদ্দিন, শহীদ খুররমের সহযোদ্ধা ও চাচাতো ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সালেহ, ছোট ভাই মোতাসিম বিল্লাহ শিবলী প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ।ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

অনুষ্ঠানে উন্নয়ন সংঘ, ব্র্যাক, সিঁড়ি সমাজ কল্যাণ সংস্থা, মুক্তিসংগ্রাম যাদুঘর, বেলটিয়া উচ্চবিদ্যালয়সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অংশ নেন।

বীর বিক্রম শাহ মোতাসিম বিল্লাহ খুররম ১৯৫১ সালের ২০ নভেম্বর তৎকালীন জামালপুর মহকুমার শ্রীবরদী থানার (বর্তমানে শেরপুর জেলার উপজেলা) কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের মলামারী গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত প্রগতিশীল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম শাহ মো. মোশাররফ হোসেন এবং মা বেগম ফজিলাতুন নেছা। খুররম ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তিনি সহযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে নিয়ে ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর ভোরে জামালপুর শহরকে পাকহানাদার মুক্ত করার শেষ লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়ে শহরের বেলটিয়ায় সম্মুখ যুদ্ধে তিনি শহীদ হন। তাঁর অসাধারণ দেশপ্রেম, অসীম সাহসিকতা ও মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে মরণোত্তর ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভূষিত করে।