শরীরে ঘাঁ আক্রান্ত অবস্থায় শেরপুর সীমান্তে বন্যহাতির মৃতদেহ উদ্ধার

শরীরে ঘাঁ আক্রান্ত অবস্থায় শেরপুর সীমান্তে বন্যহাতির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম: মুখে ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ঘাঁ রোগে আক্রান্ত অবস্থায় শেরপুরের বনাঞ্চল থেকে একটি বন্যহাতির শাবকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ১৯ নভেম্বর সকালে জেলার নালিতাবাড়ীর পানিহাতা ফেকামারীর শেষ সীমানা থেকে একটি বন্যহাতির শাবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ওই এলাকাটি ময়মনসিংহের মায়াগাছি ঝোড়ার সন্নিকটবর্তী।

এ নিয়ে গেল ১০ দিনের ব্যবধানে শেরপুর সীমান্ত এলাকা থেকে দুটি বন্যহাতির মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘটলো।

এর আগে ৯ নভেম্বর শ্রীবরদীর মালাকোচা এলাকার সোনাঝুঁড়ি টিলা থেকে আরও একটি বন্যহাতির মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। ওই ঘটনায় প্রথমবারের মতো চারজনের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে মামলা করে বন বিভাগ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত কয়েকদিন যাবত খাদ্যের সন্ধানে নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের পানিহাতা এলাকায় গারো পাহাড় থেকে বন্যহাতির একটি দল লোকালয়ে এসে ফসলের ক্ষেতে হানা দিয়ে আসছিলো। এর মধ্যেই ১৯ নভেম্বর সকালে পানিহাতা সীমান্তের মায়াঘাঁষি এলাকায় ফসলি ক্ষেতের পাশে একটি বন্যহাতির শাবকের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী। পরে খবর পেয়ে বনবিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওই হাতিটির মৃতদেহ উদ্ধার করে।

নালিতাবাড়ীর মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল করিম জানান, উদ্ধারকৃত হাতিটির মুখে ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ঘাঁ লক্ষ্য করা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে অসুস্থতাজনিতকারণে হাতির শাবকটির মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্ত সাপেক্ষে এর আসল কারণ উদঘাটন করা যাবে।

তিনি আরও জানান, বন্যহাতিটি পুরুষ প্রজাতির এবং এর বয়স আনুমানিক দুই বছর।

অন্যদিকে শ্রীবরদীর ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, অবৈধভাবে বন দখল করে ফসলি জমি তৈরি করছে পাহাড়িরা। এছাড়াও বনের গাছ কেটে বিক্রি করে বন ধ্বংসও করছে তারা। খাবারের সন্ধানে হাতি লোকালয়ে চলে আসছে। হাতি ঠেকাতে পাহাড়িরা বসতভিটা ও সবজি ক্ষেতের চারপাশে জিআই তার দিয়ে ঘিরে তাতে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়।

সেই তারে জড়িয়ে গেল ৯ নভেম্বর মারা যায় আরও একটি বন্যহাতি। এ ঘটনায় এবারই প্রথম শ্রীবরদী থানায় মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় মালাকুচা এলাকার মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আমেজ উদ্দিন ও সমেজ উদ্দিন, মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে আশরাফুল ও হাতেম আলীর ছেলে শাহজালালকে আসামি করা হয়েছে।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সাল থেকে ২০২১ সালের এখন পর্যন্ত আনুমানিক ৭৩টি হাতি মারা গেছে। বিভিন্ন সময়ে পাহাড়ে হাতি মারা গেলেও এর মূল কারণ এখন পর্যন্ত উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি।