বকশীগঞ্জের গরুহাটি-গাজীরপাড়া রাস্তার বেহাল দশা, দ্রুত সংস্কারের দাবি!
জিএম ফাতিউল হাফিজ বাবু, বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম
জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় সংস্কারের অভাবে গরুহাটি-গাজীরপাড়া রাস্তায় বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে মেরামত বা সংস্কারের কাজ না হওয়ায় মানুষের চলাচলে ব্যাপক সমস্যার দেখা দিয়েছে। এতে করে সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে নির্মিত বকশীগঞ্জ পৌর শহরের পুরাতন গরুহাটি থেকে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের গাজীরপাড়া বাজার পর্যন্ত রাস্তাটিতে ব্যাপক খানা খন্দ, ছোট ছোট গর্ত, রাস্তার দুপাশ ভেঙে গিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। প্রতিদিন এই রাস্তাটি দিয়ে হাজার হাজার মানুষ, যান চলাচল করে থাকে।
এই রাস্তা দিয়ে উপজেলা সদর, নঈম মিয়ার বাজার, জব্বারগঞ্জ, দসের হাট বাজারসহ বাণিজ্যিক কেন্দ্রে যেতে হয়। সাধুরপাড়া ইউনিয়ন, বাহাদুরাবাদ ইউনিয়ন, মেরুরচর ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য বিভিন্ন শহরে বাজারজাত করতে এই রাস্তাটি ব্যবহার করতে। পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ তাদের প্রয়োজন, অপ্রয়োজনে রাস্তাটি ব্যবহার করতে হয়।
দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি সংস্কার বা মেরামত না করায় পিচ ঢালাই উঠে গিয়ে ছোট ছোট খানাখন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কবে নাগাদ রাস্তাটির শেষবার মেরামত করা হয়েছিল তাও জানেন না স্থানীয়রা। বিশেষ করে ২০১৯ ও ২০২০ সালের ভয়াবহ বন্যায় এই রাস্তাটি বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় এবং তীব্র স্রোতের কারণে রাস্তার দুপাশে ভেঙে গিয়ে সরু হয়েছে। ফলে এই রাস্তা দিয়ে বড় ধরনের কোন যান চলাচল করতে পারছে না। বকশীগঞ্জ পুরাতন গরুহাটি থেকে গাজীর পাড়া রাস্তাটির ৮ কিলোমিটার রাস্তাতে ছোট বড় ৬০টি খানা খন্দ, গর্ত রয়েছে। এতো বেহালদশার কারণে অটো রিকশা, ভ্যানগাড়ি, মোটরসাইকেল, টলি গাড়িসহ প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে মানুষ। এই রাস্তার ধাতু কান্দা বাজার ব্রিজের পাশে পিচ ঢালাই সরে গেছে এবং সিংহেরচর ব্রিজের সংযোগ সড়কে ভেঙে যাওয়ায় ভারি যানচলাচল দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে।
অটোরিকশাচালক লিটন মিয়া জানান, এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালাতে গিয়ে প্রতিদিন সমস্যা হচ্ছে। যা আয় করি বিভিন্ন সময়ে গাড়ি মেরামত করতেই শেষ হয়।
কলেজ ছাত্র হাবিবুর রহমান জানান, বকশীগঞ্জ শহরে যেতে যেখানে সময় লাগার কথা ১০ মিনিট সেখানে ভাঙা রাস্তার কারণে সময় লাগছে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট। কোন কোন সময় আরও বেশি সময় লেগে যায়। এলজিইডির এই রাস্তাটি এখন জনদুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। এই এলাকার হাজার হাজার মানুষ অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু জানান, অসংখ্য গর্ত ও বন্যায় ভাঙনের কারণে রাস্তাটি বেহাল হয়েছে। তবুও আমি ব্যক্তিগত অর্থে কয়েক জায়গায় মাটি ভরাট করে দিয়েছি। তিনি এলজিইডির কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুন মুন জাহান লিজা জানান, রাস্তাটির বেহাল অবস্থার কথা বিবেচনা করে প্রভাতী প্রকল্পের মাধ্যমে মাটি ভরাট কাজের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আশাকরি দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তার দুপাশের মাটি ভরাট কাজ হবে।