বঙ্গবন্ধুর অনুসৃত নীতির নেতৃত্বেই দেশ পরিচালনা করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা : রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম

লাল-সবুজের নতুন কোচের আন্তঃনগর ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেন সার্ভিসের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন। ছবি : বিল্লাল হোসেন মন্ডল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, দেওয়ানগঞ্জ থেকে ফিরে
বাংলারচিঠিডটকম :

রেলমন্ত্রী আইনজীবী মো. নুরুল ইসলাম সুজন এমপি বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অনুসৃত নীতির নেতৃত্বেই বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনা করছেন। প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি হলো- দেশের গরিব সাধারণ মানুষদের কিভাবে সামাজিকসহ সার্বিকভাবে উন্নয়ন সাধন করা যায়। কিভাবে মা-বোনদের উন্নয়ন করা যায়। কিভাবে তাদের ক্ষমতায়ন করা যায়। অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে কিভাবে সমৃদ্ধ করা যায়। আমাদের কাজ হবে প্রধানমন্ত্রীর সেই নীতিতেই দায়িত্ব পালন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

রেলমন্ত্রী ১১ মার্চ দুপুরে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ বাজার-ঢাকা রুটে লাল-সবুজের নতুন কোচের আন্তঃনগর ব্রহ্মপুত্র ট্রেন সার্ভিসের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দেওয়ানগঞ্জ বাজার রেলস্টেশন প্লাটফরমে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব) মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, তথ্য প্রতিমন্ত্রী চিকিৎসক মো. মুরাদ হাসান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, জামালপুর সদরের এমপি মো. মোজাফফর হোসেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসতিয়াক হোসেন দিদার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ।

রেলমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ভিক্ষুকের জাতির কোন সম্মান নেই। আমরা আত্মনির্ভশীল মর্যাদাবান একটি দেশ হিসেবে মাথাউঁচু করে দাঁড়াতে চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বেই ইতিমধ্যে বাংলাদেশকে একটি নিম্নআয়ের দেশ থেকে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছি। আশা করছি আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে খুঁজে পাবো।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় রেলপথ ও রেলস্টেশনগুলোর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের চিত্র তুলে ধরে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, সারাদেশে প্রায় ৪০০টি রেলস্টেশনের মধ্যে চলতি অর্থ বছরে ৫০টি রেলস্টেশনের যাত্রীসেবার মান উন্নয়নে আধুনিকায়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। এই ৫০টি রেলস্টেশন উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ বাজার, ইসলামপুর, সরিষাবাড়ী ও জামালপুর জংশন রেলস্টেশন এবং ময়মনসিংহের গফরগাঁও ও ময়মনসিংহ জংশন রেলস্টেশন রয়েছে। এসব স্টেশনের প্লাটফরম উচুঁ করাসহ টাইলস বসানো, প্রয়োজনীয় সংখ্যক নতুন প্লাটফরম ও ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণসহ অন্যান্য আধুনিক সুযোগসুবিধার সৃষ্টি হবে।

বাঁশি বাজিয়ে সবুজ নিশান নেড়ে লাল-সবুজের নতুন কোচের আন্তঃনগর ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেন সার্ভিসের শুভ উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

রেলমন্ত্রী আরো বলেন, ঢাকা-জামালপুর রুটে ডাবল লাইনের রেলপথের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এখন জামালপুর থেকে ঢাকা যেতে লাগে ৫ থেকে ৬ ঘন্টা। আশা করি প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ভবিষ্যতে আপনারা ২ থেকে আড়াই ঘন্টায় ট্রেনে করে ঢাকায় যেতে পারবেন। জামালপুরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ রুটে চলাচলকারী আন্তঃনগর বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি এখন থেকে দেওয়ানগঞ্জ বাজার পর্যন্ত চলাচল করবে বলে ঘোষণা দেন। একই সাথে তিনি এই রুটে একজোড়া বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন চলবে বলেও ঘোষণা দেন। এছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল-সরিষাবাড়ী-জামালপুর রুটে গত বছর চালু হওয়া আন্তঃনগর জামালপুর একপ্রেস ট্রেনটিও দেওয়ানগঞ্জ বাজার রেলস্টেশন পর্যন্ত চলাচল করবে বলেও ঘোষণা দেন।

রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, যমুনার এপার-ওপার মানুষের যাতায়াতের পথকে আরো সুগম করতে বালাসি-বাহাদুরাবাদ ঘাট এলাকায় চট্টগ্রামের কর্নফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন টানেলের মতো একটি টানেল নির্মাণের সমীক্ষা চলমান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ উদ্যোগে বিদেশী বিশেষজ্ঞদের দিয়ে এই টানেল নির্মাণের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে সমীক্ষা করাচ্ছেন। ইনশাল্লাহ এই টানেলও হবে। এই টানেল হলে যমুনার দুই পাড়ের মানুষ ও যানবাহন চলাচলের এক অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতেও এই টানেল ভালো প্রভাব রাখবে।

উদ্বোধনী বক্তব্য শেষে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ফিতা কেটে দেওয়ানগঞ্জ বাজার-ঢাকা রুটের লাল-সবুজের নতুন কোচের আন্তঃনগর ব্রহ্মপুত্র ট্রেন সার্ভিসের শুভ উদ্বোধন করেন। এরপর রেলমন্ত্রী বাঁশি বাজিয়ে সবুজ নিশান নেড়ে ট্রেনটি চালু করেন। তবে উদ্বোধন উপলক্ষে ছেড়ে যাওয়া এই ট্রেনে কোন যাত্রী বহন করা হয়নি। রেলমন্ত্রী ও রেলওয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই ট্রেনে করে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।