পুলিশ সদস্যদের আরও আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাইবার ক্রাইম, মানি লন্ডারিং, মানবপাচার, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের মত মারাত্মক সামাজিক অপরাধ দমনে পুলিশ সদস্যদের আরও আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।

অপরাধের ধরন বদলাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আধুনিক প্রযুক্তির যুগ এবং সাইবার ক্রাইম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এটাকে আমাদের দমন করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গতানুগতিক অপরাধের পাশাপাশি সাইবার ক্রাইম, মানি লন্ডারিং, মানবপাচার ইত্যাদি বৈশ্বিক অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের মতো মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি এবং নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা-নির্যাতনসহ নিত্য নতুন সামাজিক অপরাধ। এসব অপরাধকে আরো দক্ষতার সঙ্গে দমন করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী ৩ জানুয়ারি সকালে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৩৭তম ব্যাচের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও লিংকের সাহায্যে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, কেবল দেশে নয়, বিদেশে পাঠিয়ে উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এটা অব্যাহত রাখা দরকার। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, একটা নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিলে তারা যতক্ষণ কাজে থাকবেন তাতে তাদের কর্মদক্ষতা আরো বৃদ্ধি পাবে। সে ব্যবস্থাও করতে হবে।’

ফেসবুক, অ্যাপস বা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে গুজব ছড়নো বা মিথা তথ্য প্রদানসহ কিশোর ও উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েরা নানা অপরাধে যুক্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেখান থেকে তাদের বের করে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নিতে হবে। সাধারণভাবে গুজব রটানো বা এ ধরনের কাজ যেন করতে না পারে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।’

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা এবং গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে নিরলসভাবে কাজ করার জন্যও শেখ হাসিনা আহ্বান জানান।

এসব কাজে পুলিশের শক্তিশালী ও সাহসী ভূমিকার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী কর্তব্য পালনকালে মৃত্যুবরণকারী পুলিশ সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি ও সমবেদনা জানান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা, মানুষের সেবা দেয়া, তাদের জীবন মান উন্নত করা-এটাই হচ্ছে আমাদের সব থেকে বেশি প্রয়োজন।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। পুলিশের আইজিপি ড. বেনজির আহমেদ স্বাগত বক্তব্য রাখেন ।

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপাল খন্দকার গোলাম ফারুক, স্থানীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণ গ্রহণকালে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ শিক্ষানবিশ সহকারি পুলিশ সুপারদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পুরস্কার বিতরণ করেন।

সকল বিষয়ে কৃত্বিপূর্ণ অবদানের জন্য সহকারি পুলিশ সুপার স্নেহাশিষ কুমার দাস ‘বেস্ট প্রবেশনার’ পুরস্কার লাভ করেন।

অনুষ্ঠানে শিক্ষানবিশ সহকারি পুলিশ সুপারদের শপথ বাক্য পাঠ করানো হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয় এবং তিনি মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন।সূত্র:বাসস।