শেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাইয়ে তৃণমূলের ভোট
সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম
শেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের পাঁচজন প্রার্থী থাকায় জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রার্থীর নামের তালিকা ক্রমানুসারে চূড়ান্ত করতে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে ভোটের আয়োজন করা হয়েছে। ৩ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় শহরের জিকে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ভোট গ্রহণ শুরু হয়। দুপুর তিনটা পর্যন্ত ভোট শেষে বিকালে শুরু হবে গণনার কাজ। এ দিন তৃণমূলের ১০৯ জন নেতাকর্মী ভোট প্রদান করেন। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক আইনজীবী চন্দন কুমার পাল বলেন, ইতোমধ্যে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে পাঁচজন প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন। এখন কেন্দ্রে সবার নাম পাঠানো হবে। তবে ওইসব প্রার্থীর নাম ক্রমানুসারে তালিকাভুক্ত করতে শহরে ও পৌরসভায় অবস্থানরত আওয়ামী লীগের সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে তা করা হবে। পরবর্তীতে এ তালিকাটি কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হবে। তিনি তার বোর্ডের অন্যান্য সদস্যদের সাথে আলোচনা ও সমস্ত দিক বিবেচনা করে মনোনয়ন দেবেন। যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে তিনিই আমাদের দলীয় প্রার্থী হিসাবে বিবেচিত হবেন।
অন্যদিকে মেয়র নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলে প্রার্থী বাছাইয়ে ভোটের আয়োজন করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক আইনজীবী রফিকুল ইসলাম আধার। ৩ ডিসেম্বর সকালে শহরের বটতলা এলাকায় ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তিনি শেরপুর পৌরসভার মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আইনজীবী রফিকুল ইসলাম আধার বলেন, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি গত ২৮ নভেম্বর প্রেরিত এক পত্রে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতান্ত্রিক নিয়ম-নীতি এবং তৃণমূলের ভিত্তিতে পৌরসভার মেয়র পদে প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।’ তাই ‘দলীয় গঠনতন্ত্রের ২৮ (৫) ধারা অনুযায়ী জেলা-উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের পরামর্শ গ্রহণপূর্বক কমপক্ষে ৩ জনের একটি প্যানেল প্রস্তাব’ আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রেরণ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় সেই নিদের্শনা গোপন রেখে এবং উপেক্ষা করে ৩ ডিসেম্বর পৌরসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ভোটের আয়োজন করা হয়েছে। এরই প্রতিবাদে প্রেস কনফারেন্সে তিনি তার রাজনৈতিক-সামাজিক অবস্থান, জনসম্পৃক্ততা ও ত্যাগের প্রশ্নে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে এখনও আশাবাদী বলে উল্লেখ করেন।
এর আগে ২ ডিসেম্বর তৃণমূলের ভোট বাতিলক্রমে তিনিসহ দলের ৫ মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকা জ্যেষ্ঠতা বা নামের আদ্যক্ষর অনুযায়ী বা লটারীর মাধ্যমে নির্ধারণ করে ক্রমানুযায়ী দলের কেন্দ্রীয় দপ্তরে পাঠানোর দাবি জানান। অন্যথায় তৃণমূল বর্জনের ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আইনজীবী আখতারুজ্জামান, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক, সাবেক সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক তাপস কুমার সাহা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইফতেখার হোসেন কাফী জুবেরী, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি আব্দুল কাদির, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক আবুল হোসেন রাসেল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম সম্রাট, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল মেহেদী, জেলা কৃষক লীগের সহ-সভাপতি জয়নাল আবেদীন হাজারী, সদর উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আল- হেলাল, শহর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুর রহমান আলাল, যুবলীগ নেতা মোশারফ হোসাইন বুলবুল, আব্দুল বাতেন, মঙ্গল চন্দ্র দাস, ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল আলমসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।