জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম
দায়িত্ব পালনের পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার প্রাক্কালে সংবাদ সম্মেলন করে নাগরিকদের অবহিত করার জন্য পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়নচিত্র তুলে ধরলেন জামালপুরের মেলান্দহ পৌরসভার মেয়র মো. শফিক জাহেদী রবিন। ২৭ অক্টোবর দুপুরে পৌরসভা মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মেয়র মো. শফিক জাহেদী রবিন বলেন, মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিগত পাঁচ বছরে মেলান্দহ পৌরসভার ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে পৌর নাগরিকদের সেবার মান বাড়াতে পেরেছি। পৌরসভার বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন, রাস্তাঘাট, ড্রেন, কালভার্ট সংস্কার ও নির্মাণ, সড়কবাতি স্থাপন, অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণের মাধ্যমে বিদ্যুৎ খরচ কমিয়ে আনা, শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে টারসিয়ারি ড্রেন, সেকেন্ডারি আরসিসি ড্রেন, বিভিন্ন মসজিদ-মাদরাসার সংস্কার ও উন্নয়নসহ সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি সুপেয় পানি সরবরাহের উন্নয়নে।
তিনি বলেন, পৌর নাগরিকদের জন্য সার্বক্ষণিক আর্সেনিকমুক্ত সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য ইতিমধ্যে দুই কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৫ দশমিক ৪১ কিলোমিটার পানির পাইপলাইন স্থাপন, ৯১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা ব্যয়ে দুটি উৎপাদক নলকূপ, চারটি পরীক্ষামূলক নলকূপ ও একটি ইলেক্ট্রো মেকানিক্যাল পাম্পহাউজ স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে ঘন্টায় ১৮৩ ঘনমিটার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে আধুনিক পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। এছাড়াও পৌরসভার চারটি দরিদ্র এলাকা চিহ্নিত করে দরিদ্রদের সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আরসিসি রাস্তা, সড়কবাতি, স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ১৫৫টি পাকা টয়লেট, সুপেয় পানির জন্য ৪২টি নলকূপ স্থাপন করেছি। এছাড়াও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তিদেরকে ১৬৫টি গভীর নলকূপ সরবরাহ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মেলান্দহ বাজার ও রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন স্থানে চারটি আধুনিক পাবলিক টয়লেট এবং বিভিন্ন স্থানে আরো ১২টি কমিউনিটি পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে। নারী-পুরুষ বৈষম্য দূরকরণ, অসচ্ছল নারীদের সেলাই কাজের প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন বিতরণসহ সামাজিক নিরাপত্তামূলক বিভিন্ন উন্নয়ন ও সেবামূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করে নাগরিকদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।
মেয়র শফিক জাহেদী রবিন আরও বলেন, পাঁচ বছর আগে ৩৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকার ঋণের বোঝা ঘাড়ে নিয়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলাম। পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প সঠিকভাবে বাস্তবায়ন এবং কোন প্রকার অনিয়মের সুযোগ না দিয়ে, অযাচিত ব্যয় কমিয়ে বা ব্যয় সাশ্রয় করে পৌর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করার পরও বর্তমানে পৌরসভার রাজস্ব তহবিলে ৪৬ লাখ ১৩ হাজার ৩৭২ টাকা স্থিতি রেখে যেতে পারছি। তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিগতদিনের ন্যায় ভবিষ্যতেও সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মেলান্দহ পৌরসভার সচিব মো. শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া, সহকারী প্রকৌশলী সবুজ কাজী, ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষক মো. মাকসুদুর রহমান, প্যানেল মেয়র মো. আমিনুল ইসলামসহ পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলররা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে জেলায় কর্মরত বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।