সরিষাবাড়ী পৌরসভার মেয়র-সচিবের কক্ষে তালা দিল পরিচ্ছন্নকর্মীরা

মেয়র ও সচিবের কক্ষে তালা দেয় পরিচ্ছন্নকর্মীরা। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌরসভার ভবনে বকেয়া বেতনের দাবিতে পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মী ও সেবাবঞ্চিত নাগরিকরা ৬ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেছে। পরে তারা মেয়র, সচিব ও হিসাবরক্ষকের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে বন্ধ করে কর্ম বিরতির ঘোষণা দেয়।

পৌরসভা কার্যালয় সূত্র জানায়, মেয়র রুকুনুজ্জামান রোকন ভাস্কর্য ভাঙচুর ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পৃথক দু’টি মামলায় ১৫ মে থেকে পলাতক রয়েছেন। এতে কর্মচারী ও পরিচ্ছন্নকর্মীদের বেতন-ভাতা মাসের পর মাস বকেয়া পড়ে আছে। কাউন্সিলরদের সম্মানী বাকি প্রায় ১৯-২০ মাস ধরে। এতে পৌরসভার স্বাভাবিক কার্যক্রম অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। পরিচ্ছন্নকর্মীরা কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় পৌর এলাকায় নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে। মেয়র পলাতক থাকায় কর্তৃপক্ষ কাউকে মেয়রের দায়িত্ব না দেওয়ায় পৌর কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। পরিচ্ছন্নকর্মীরা বেতন না পেয়ে ৬ সেপ্টেম্বর পৌরসভা ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন। তারা মেয়র, সচিব ও হিসাবরক্ষকের কক্ষে তালা দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।

পরিচ্ছন্নকর্মী খোকন, সাজন, সুমনসহ আরও অনেকেই এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা ২৯ জন পরিচ্ছন্নকর্মী পৌরসভায় কাজ করি। সবারই তিনমাসের বেতন বকেয়া। আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। বেতন নিয়ে কেন ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে আমাদের সাথে। মেয়র না আসায় আমরা বেতন পাচ্ছি না। এতে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। বেতন না পাওয়া পর্যন্ত কাজ করবো না এবং পৌরসভার তালাও খুলে দেবে না বলে জোর দাবি জানান।

পরিচ্ছন্নকর্মী ও সেবাবঞ্চিত নাগরিকরা বিক্ষোভ করে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

বলারদিয়ার গ্রামের পারভীন বেগম অভিযোগ করে জানান, ছেলের চাকরির জন্য জন্ম সনদ নিতে কয়েকদিন আসলাম। কিন্তু মেয়রের স্বাক্ষরের অভাবে এখনো তা জোগাড় করতে পারিনি।

ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম অভিযোগ করেন, একটি ট্রেড লাইসেন্সের জন্য ১৫ দিন ধরে ঘুরছি। মেয়র নাই, তাই নিতে পারছি না।

পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী এ প্রতিবেদককে জানান, মেয়রে বিরুদ্ধে দু’টি মামলা হয়েছে। তাই তিনি পৌর কার্যালয়ে আসেন না। কর্তৃপক্ষ কাগজপত্রে স্বাক্ষর দেওয়ার মতো কাউকে মেয়রের দায়িত্ব দেয়নি। নাগরিক সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন পৌর জনগণ। অপরদিকে পরিচ্ছন্নকর্মীরা বেতনের দাবিতে পৌরসভা কার্যালয় তালাবদ্ধ করে দেওয়ায় অচলাবস্থা বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে মেয়র রুকুনুজ্জামান রোকনের বক্তব্য জানার জন্য মুঠোফোনে কয়েকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।