‘একদিনে দুটি বাল্যবিয়ে আটকে দিলেন ইউএনও রুবেল’

ঝিনাইগাতী উপজেলার ফাকরাবাদ গ্রামে বাল্যবিয়ে বন্ধ করে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী হাকিম ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জয়নাল আবেদীন। ছবি : বাংলাচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

একদিনে দুটি বাল্যবিয়ে আটকে দিয়েছেন ইউএনও রুবেল মাহমুদ। তিনি শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় কর্মরত। ২৯ জুন বিকালে ও রাতে ওই বিয়ে দুটি বন্ধের ব্যবস্থা করেন তিনি। সেই সাথে প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত কিশোরীদের অভিভাবকের কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করেন। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনকে সাধুবাদ জানিয়েছে স্থানীয়রা।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২৯ জুন রাত আটটায় উপজেলার সালধা গ্রামে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীর সাথে হামিদুর রহমান (২২) নামে এক যুবকের বিয়ের আয়োজন চলছিল। এমন খবর পেয়ে ইউএনও ওই কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে হাজির হন। এ সময় বাল্যবিয়ে বন্ধ করে কিশোরীর বাবা শহিদুল ইসলামকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। বাল্যবিয়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া ওই কিশোরী পাইকুড়া এআরপি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী।

অন্যদিকে একই দিন বিকালে উপজেলার ফাকরাবাদ গ্রামের ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীর সাথে হাছান মিয়া (২৬) নামের এক যুবকের বিয়ের খবর পান ইউএনও। পরে ওই কিশোরীর বাড়িতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জয়নাল আবেদীন ও পুলিশ পাঠিয়ে বিয়ে বন্ধের ব্যবস্থা করেন। এ সময় এ কিশোরীর বাবা সামিদুল হককে ৩ হাজার টাকা অর্থদ- দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

ইউএনও’র এমন ত্বরিত পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়ে স্থানীয় একটি কলেজের প্রভাষক খন্দকার স্বপন বলেন, বাল্যবিয়ে একটি সামাজিক ব্যাধি। প্রশাসন এভাবে কঠোর পদক্ষেপ নিতে থাকলে আমরা এ ব্যাধি থেকে মুক্ত হতে পারবো।

বাল্যবিয়ের ফলে কিশোরীর জীবন ও ভবিষ্যৎ ধ্বংস হয়ে যায় উল্লেখ করে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, অল্প বয়সে মা হওয়ার কারণে অনেক কিশোরী শারীরিক ও মানসিক ঝুঁকিতে পড়ে। এসব কারণে বাল্যবিয়ে বন্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এ কারণে ওই দুই কিশোরীর বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে।

এছাড়া সাবালিকা হওয়ার আগ পর্যন্ত মেয়েকে বিয়ে দেবে না মর্মে অভিভাবকদের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকারনামাও আদায় করা হয়েছে বলে তিনি জানান।