মেলান্দহে এক যুবকের করোনা শনাক্ত, ঘোষেরপাড়া ইউনিয়ন লকডাউন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় ঢাকাফেরত এক যুবকের নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ওই যুবকের বাড়ি উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের বীর ঘোষেরপাড়া গ্রামে। ৫ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে পুরো ঘোষেরপাড়া ইউনিয়ন লকডাউন ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিক্যাল টিম ওই যুবককে তার বাড়ি থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ৩টায় জামালপুর সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করিয়েছেন।

জামালপুরের সিভিল সার্জন চিকিৎসক আবু সাঈদ মো. মাহবুবুর রহমান এ প্রতিবেদককে জানান, বীর ঘোষেরপাড়া গ্রামের ওই যুবকের করোনার উপসর্গ জ্বর, গলাব্যথা ও কাঁশি থাকায় ৪ এপ্রিল বিকেলে তার নমুনা সংগ্রহ করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। ৫ এপ্রিল সন্ধ্যার পর সেখান থেকে ওই যুবকের নমুনায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার প্রতিবেদন আসে। পরে মধ্যরাতেই ওই যুবকের বাড়িতে পৌঁছে চিকিৎসার জন্য তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে জামালপুর সদর হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। আপতত সেখানেই তার চিকিৎসা চলবে।

সিভিল সার্জন আরো জানান, গত তিনদিনে জেলায় ১৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে মেলান্দহের এই যুবকটির দেহেই প্রথম এ জেলায় করোনা শনাক্ত হলো। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় ঘোষেরপাড়া ইউনিয়ন লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। করোনাআক্রান্ত ওই যুবকের সোস্যাল কন্ট্যাক্টিং সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে সেইসব ব্যক্তিদেরকেও শনাক্ত করে নমুনা সংগ্রহ করা হবে।

গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের বীর ঘোষেরপাড়া গ্রামের ওই যুবক ঢাকায় বনানীর একটি প্লাস্টিক কারখানার কর্মচারী। তার বয়স ২৬ বছর। তিনি অবিবাহিত। তিনি গত ২৬ মার্চ ঢাকা থেকে জ্বর ও গলাব্যথায় আক্রান্ত হয়ে গ্রামের বাড়ি বীর ঘোষেরপাড়ায় যান। বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা থাকলেও এলাকায় তিনি অবাধে ঘোরাফেরা, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের বাড়িতে যাতায়াত করে অনেক লোকজনের সংস্পর্শে আসেন। তাকে নিয়ে এলাকায় সন্দেহ দেখা দিলে ওই গ্রামে করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নমুনা পরীক্ষায় তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় গোটা ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নে করোনাভীতি প্রকট আকার ধারণ করেছে।

ঘোষেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ওবায়দুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, করোনার উপসর্গ নিয়ে ওই যুবকের অবাধ চলাফেরার কারণে এই ইউনিয়নের মানুষদের দুঃশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। লকডাউনের বিষয়ে ৬ এপ্রিল সকাল থেকে এলাকায় মাইকিং করা হবে। প্রায় দশ হাজার পরিবার এই লকডাউনের আওতায় থাকবে।

মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তামিম আল ইয়ামীন এ প্রতিবেদককে জানান, বীর ঘোষেরপাড়ার ওই যুবকের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় ঘোষেরপাড়া ইউনিয়ন পুরোটাই লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এ ইউনিয়নের প্রতিটি বাড়ির লোকজন টানা ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকবে। একই সাথে এ ইউনিয়নে সর্বসাধারণের যাতায়াতও বন্ধ থাকবে এবং কেউ ওই ইউনিয়ন থেকে বের হতে পারবে না।