প্রভাষক মানিকের প্রচেষ্টায় নিরক্ষরমুক্ত হলো বকশীগঞ্জের নয়াপাড়া গ্রাম

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

দুই মাস আগেও যে গ্রামে নিরক্ষরের কলঙ্ক ছিল। দলিল লেখাসহ কোন কাজ করতে হলে টিপসই দিতে হতো। আর সেটাই মেনে নিতে পারছিলেন না ওই গ্রামের মোসাদ্দেকুর রহমান মানিক।

তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন যেকোন মূল্যে এই গ্রামকে নিরক্ষরমুক্ত করা হবে। যেই ভাবা সেই কাজ। নিজেই উদ্যোগ নিলেন নিরক্ষরমুক্ত গ্রাম করার এবং সফল হয়েছেন। মাত্র দুই মাসের মাথায় সেই গ্রাম এখন নিরক্ষর মুক্ত।

জামালপুরের বকশীগঞ্জ পৌর এলাকায় অবস্থিত এই গ্রামের নাম মালিরচর নয়াপাড়া গ্রাম।

এই গ্রামের প্রতিটি মানুষ এখন অক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন। কাউকে কোন কাজের জন্য টিপসই দিতে হয় না। এই গ্রামকে নিরক্ষরমুক্ত করার জন্য যিনি উদ্যোগ ও পরিশ্রম করেছেন তিনি মোসাদ্দেকুর রহমান মানিক।

বকশীগঞ্জ খয়ের উদ্দিন আলিম মাদরাসার প্রভাষক তিনি। গত ১১ ডিসেম্বর থেকে এই গ্রামের ২৫০ জন নারী-পুরুষকে অক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন করার জন্য তিনি রাত্রিকালীন লেখাপড়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। গ্রামের শিক্ষিত তরুণদেরকে উদ্বুদ্ধ করে গ্রামের নিরক্ষর মানুষদের অক্ষর দান কার্যক্রম শুরু করা হয়। মোসাদ্দেকুর রহমান মানিকের এই কার্যক্রমকে স্বাগত জানান অনেকেই। মাত্র দুই মাসের মাথায় এই গ্রামের সকল নিরক্ষর ব্যক্তি স্বাক্ষর দেওয়ার উপযোগী হয়ে উঠে। এখন সকলেই নিজ নাম, নিজ গ্রামসহ পূর্ণ ঠিকানা লিখতে পারেন।

এমন উদ্যোগ নেওয়ায় নিজ এলাকায় প্রশংসায় ভাসছেন মোসাদ্দেকুর রহমান মানিক ও তার সহযোগী তরুণরা। শুধু তাই নয় নিরক্ষরমুক্ত করার পাশাপাশি গ্রামবাসীর উদ্যোগে এই গ্রামের চারজন ভিক্ষুককে পুনর্বাসন করা হয়েছে।

এই মাসেই মালিরচর নয়াপাড়া গ্রামকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিরক্ষরমুক্ত ঘোষণা দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে নিরক্ষরমুক্ত গ্রাম প্রতিষ্ঠার উদ্যোক্তা ও বকশীগঞ্জ খয়ের উদ্দিন আলিম মাদরাসার প্রভাষক মোসাদ্দেকুর রহমান মানিক বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। গ্রামের তরুণদের উদ্বুদ্ধ করে সকলের সহযোগিতায় এই গ্রামকে নিরক্ষরমুক্ত করতে পেরেছি। এই কাজে সফল হতে পেরে আমি গর্ববোধ করছি।

প্রতিটি গ্রামে এই সামাজিক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ুক এমনটাই আশা করছেন সুুধীমহল।