বিনামূল্যে ঘর পেয়ে ইসলামপুরে অসহায়দের স্বপ্ন পূরণ

গৃহহীন অসহায়দের জন্য নির্মিত দুর্যোগ সহনীয় পাকা ঘর। ছবি : লিয়াকত হোসাইন লায়ন

লিয়াকত হোসাইন লায়ন, ইসলামপুর
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার স্বামীহারা জামিরন বেওয়া (৫৫)। তার স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি সন্তানদের নিয়ে খুবই অসহায় হয়ে পড়েন। ইট ভেঙ্গে যা রোজগার করেন তা দিয়ে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। তাদের ভাঙ্গা কুঁড়ে ঘরে চালের ছিদ্র দিয়ে বর্ষায় বৃষ্টির ফোটা আর শীতে কনকনে হিমেল হাওয়া জীবন আরো দুর্বিসহ করে দিতো। পাকা বাড়ি নির্মাণ তো দূরের কথা তাদের চাল মেরামত করতেই হিমশিম খেতে হতো। অবশেষে বিনামূল্যে ঘর দিয়ে তার স্বপ্ন পূরণ করেছে সরকার। জামিরন বেওয়া ঘর পাওয়ায় এখন মহা খুশি।

শুধু জামিরন বেওয়া নয়, বেলগাছা ইউনিয়নের ছামেনা বেওয়া, মৌজাজাল্লা গ্রামের হাওয়া বেওয়াসহ উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৫২টি উপকারভোগী অসহায় অস্বচ্ছল পরিবার ঘর পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তারা তাদের অস্বচ্ছলতার কারণে পরিবার নিয়ে কুঁড়ে ঘরেই কষ্ট করে কাটিয়েছেন। বিনামূল্যে পাকা ঘর নির্মাণ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাদের স্বপ্ন পূরণ করেছেন। তারা বলেন, আমাদের মত গরিবদের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য মহান আল্লাহ যেন প্রধানমন্ত্রীকে অনেকদিন বাঁচিয়ে রাখেন।

জানা গেছে, গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) কর্মসূটির বিশেষ বরাদ্দের অর্থ দিয়ে তৈরি গৃহহীন মানুষের জন্য সারাদেশের ন্যায় জামালপুরের ইসলামপুরে ৫২টি দুর্যোগ সহনীয় ঘর ১৩ অক্টোবর উদ্বোধন করা হয়েছে।

সরেজমিনের গিয়ে দেখা গেছে, গৃহহীনদের জন্য নির্মিত ঘরের ডিজাইন, নির্মাণসামগ্রী গুণগত মান বজায় রেখে খুবই কম বরাদ্দে পিআইসি কমিটির মাধ্যমে সৌন্দর্যপূর্ণ ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

বিনামূলে ঘর হস্তান্তরের পর একজন উপকারভোগীর সাথে কর্মকর্তাবৃন্দ। ছবি : লিয়াকত হোসাইন লায়ন

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু জানান, প্রায় ৫০০ বর্গফুটের প্রতিটি ঘরে দুটি কক্ষ, একটি করিডোর, একটি বাথরুম ও একটি রান্নাঘর রয়েছে। দুর্যোগ সহনীয় এসব ঘর টেকসই এবং প্রতিটি ঘরেই সোলার সিস্টেম আর বজ্রপাত নিরোধক ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণে দুই লাখ ৫৮ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, কারো এক বা দুই শতাংশ জায়গা আছে কিন্তু ঘর নেই বা ঘর আছে কিন্তু তা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। তাদের এই ঘর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যে পরিবারে পুরুষ সদস্য নেই বা পুরুষ সদস্য আছে কিন্তু তার বয়স ৬৫ বছরের ওপর, নদীভাঙনে যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন, এছাড়া বেদে ও হিজড়াদের জন্য এসব ঘর দেওয়া হবে।

সংসদ সদস্য ফরিদুল হক খান দুলাল বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন গ্রাম হবে শহর এই আলোকে অসহায় পরিবারের কথা চিন্তা করে, যাদের জায়গা আছে ঘর নেই, তাদের অনাকাঙ্খিত স্বপ্ন পূরণ করতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহন করছেন প্রধানমন্ত্রী।