বর্তমান সরকার গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকবান্ধব : সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেন

চ্যানেল আইয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মো. মোজাফফর হোসেন। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

মাহমুদুল হাসান মুক্তা, জামালপুর
বাংলারচিঠিডটকম

জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল আইয়ের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে জামালপুর সদর-৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মো. মোজাফফর হোসেন বলেছেন, চ্যানেল আই ২১ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।

চ্যানেল আইয়ের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ১ অক্টোবর সকালে জামালপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি বলেন, আমি আশা করি চ্যানেল আই সংবাদ পরিবেশনে বস্তুনিষ্ঠতা, নিরপেক্ষতা বজায় রাখবে এবং রুচিশীল শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান প্রচারের মাধ্যমে বাঙালি সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখবে।

তিনি চ্যানেল আইয়ের পরিচালনা পর্ষদ, সাংবাদিক, কলাকুশলী ও কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আরো বলেন, গণতন্ত্রের বিকাশ ও অগ্রযাত্রায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বর্তমান সরকার গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকবান্ধব। বর্তমান সরকার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, বিকাশ ও উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সাংবিধানিকভাবেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ (২) (খ) অনুচ্ছেদে সংবাদক্ষেত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে। দেশে গণমাধ্যমের বিকাশ ও অগ্রযাত্রায় আওয়ামী লীগ সরকার সবসময়ই অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে শেখ হাসিনা সরকার বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চালুর অনুমোদন দেয়। যা ছিল গণমাধ্যমের বিকাশে এক নতুন দিগন্তের সূচনা।

তিনি বলেন, দেশের গণমাধ্যম এখন পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করছে। আওয়ামী লীগ সরকার নতুন ৪৫টি টেলিভিশন, ২৮টি এফএম রেডিও এবং ৩২টি কমিউনিটি রেডিও চ্যানেলের অনুমোদন দিয়েছে। এসব বেসরকারি টিভি ও রেডিও’র কল্যাণে অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এ সরকার তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন ও তথ্য কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছে। জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা ২০১৪ প্রণয়ন করেছে। অন-লাইন গণমাধ্যমকে নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে ‘অন-লাইন গণমাধ্যম নীতিমালা-২০১৭’ প্রণয়ন করেছেন।

সাংবাদিকদের জন্য নবম ওয়েজ বোর্ড এবং সাংবাদিক কল্যাণ তহবিল গঠন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ‘সাংবাদিক সহায়তা ভাতা-অনুদান নীতিমালার আওতায় ২০১১-১২ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩৯৭ জন সাংবাদিককে ১০ কোটি ৭ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেছেন। এ জন্য জাতীয় সংসদে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন পাস করা হয়েছে। তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। সুস্থ বিনোদনের পথ সুগম করা হয়েছে।

সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেন আরো বলেন, সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অবাধ তথ্য প্রবাহে বিশ্বাসী। দেশের সরকারি ও বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলসমূহ নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রচার করছে। সরকার এক্ষেত্রে কোনো ধরনের বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়নি। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমসমূহ অনাপত্তির শর্ত ও দেশের প্রচলিত বিধি-বিধানের সীমারেখার মধ্যে থেকে সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন।

জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ও চ্যানেল আইয়ের জেলা প্রতিনিধি হাফিজ রায়হান সাদার সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক, জামালপুর পৌরসভার মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম মনি, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ বিভাগের পরিচালক ও বাংলারচিঠিডটকমের সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম।

আলোচনা শেষে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দকে সাথে নিয়ে কেক কাটা হয়। চ্যানেল আইয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ অংশ নেন।