ইসলামপুরে বন্যায় ঘরবাড়ি সড়ক লন্ডভন্ড

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ইসলামপুরের একটি রাস্তা। ছবি : লিয়াকত হোসাইন লায়ন

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় ভয়াবহ বন্যার পানি নেমে গেলেও উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বন্যা কবলিত উপজেলা পশ্চিমাঞ্চলের কাঁচা ও পাকা সড়ক বন্যার পানিতে ভেঙ্গে গিয়ে অসংখ্য খানা খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। পাঁচশতাধিক বাড়িঘর নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ার ফলে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে এসব এলাকার মানুষ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চিনাডুলী ইউনিয়নের উলিয়া বাজার সড়কটি বিভিন্ন জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হয়ে সাধারণ মানুষের পায়ে হেঁটে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। হাট বাজার করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের উলিয়া বাজার হয়ে সোনামুখী, জনতা বাজার পর্যন্ত প্রায় ৪০টি জায়গায় বিশাল গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় পাকা সড়কটি ভেঙ্গে লন্ডভন্ড হয়েছে। ফলে এ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

বন্যার পানির তীব্র স্রোতে বন্যা কবলিত প্রত্যেকটি সড়কের কার্পেটিং উঠে গিয়ে ছোট বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। এছাড়া কাঁচা রাস্তাগুলো মাটি সরে গিয়ে খানাখন্দে সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে জন দুর্ভোগে চরম আকার ধারন করেছে।

কৃষক রবিজল মিয়া বলেন, আমতলী থেকে বলিয়াদহ, শিংভাঙ্গা, উলিয়া, জনতা বাজার সড়কটি হেঁটে যাওয়ার কোনো জোঁ নাই। আমাদের বাড়িঘর শুধু ভাসাইয়া নিয়া যাই নাই, সবপথ বন্ধও করে দিয়ে গেছে সর্বনাশা বন্যায়। অন্যদিকে পাথর্শী ইউনিয়নের মোরাদাবাদ সড়কটি ভেঙ্গে কয়েকটি জায়গায় বিশাল গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষগুলো যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মোরাবাদবাদ ঘাট হতে কুলকান্দি হার্ট পয়েন্ট পর্যন্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধঁটি ভেঙ্গে গেছে।

ইসলামপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

এলাকাবাসী জানান, প্রয়োজনের তাগিদে জীবনযুদ্ধে বাশেঁর সাঁকো তৈরি করে চলাচল করতে হচ্ছে। কাঁচা, পাকা সড়কগুলো ভেঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় পায়ে হেঁটে চলাচল করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। চর পুটিমারী ইউনিয়নের বেনুয়ার চর বাজার সড়কের বিভিন্ন জায়গায় সেতুর নিচে মাটি সরে গিয়ে দেবে গেছে। এতে পথচারী ও যান চলাচল বন্ধ হয়েছে।

পাথর্শী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইফতেখার বাবুল জানান, মোরাদাবাদ বাজার সড়কটি বন্যার পানির স্রোতে বিভিন্ন জায়গায় ভেঙ্গে যাওয়ায় জনসাধারণ চলাচলের চরম দুর্ভোগে পড়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বাঁশের সাাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এ সড়ক দিয়ে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন কুলকান্দি ও বেলগাছা যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। সড়কগুলো দ্রুত মেরামত না করতে পারলে দুর্ভোগ আরো বাড়বে বলেও তিনি জানান।

জানা গেছে, এবারের বন্যায় উপজেলার কুলকান্দি, সাপধরী, বেলগাছা, চিনাডুলী, নোয়ারপাড়া, পাথর্শী, সদর, গাইবান্ধা, চরগোয়ালীনি ও চর পুটিমারী ইউনিয়নের সড়কগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী ও কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বন্যা কবলিত রাস্তাগুলো ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রতিটি সড়ক ভেঙ্গে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় চলাচল বন্ধ রয়েছে। ভয়াবহ বন্যায় ১৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,বাজার, ২৩৫ কিলোমিটার পাকা সড়ক, এক হাজার কিলোমিটার কাঁচা সড়ক এবং তিন হাজার মিটার সেতু, কালভার্ট ও গাছপালা, ফসলি জমিসহ প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।