বকশীগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধার ছেলেকে নির্যাতনের ভিডিও নিয়ে তোলপাড়

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায় ফহিম আহাম্মেদকে একজন লোক বেধড়ক লাঠিপেটা করছে। ছবি : ভিডিও থেকে সংগৃহীত

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় চুরির অপবাদ দিয়ে এক যুবককে লাঠিপেটা করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। ভিডিওটি ভাইরালের পর ২৬ জুলাই রাতে এ ঘটনায় জড়িত থাকায় এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, বগারচর ইউনিয়নের ডাকপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার মনোয়ার হোসেনের ছেলে ফহিম আহাম্মেদ (৩৫) কে একজন লোক বেধড়ক লাঠিপেটা করছে। যুবকটির দুই হাত শিকল দিয়ে পেছনে বেঁধে এক লোক তাকে লাঠিপেটা করছে। তবে সেখানে কিছু লোক লাঠিপেটার দৃশ্য দেখলেও কেউ প্রতিবাদ করেন নি। ২৬ জুলাই সন্ধ্যা ৬ টার দিকে এই ভিডিওটিতে ফেইসবুকে আপলোড করেন “শুধু কবিতার জন্য মনির” নামে একটি আইডি থেকে। মুহূর্তের মধ্যেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। ২৬ জুলাই লাঠিপেটার ভিডিওটি ভাইরাল হলেও ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৩ জুলাই।

এঘটনায় বকশীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগও দিয়েছিলেন ওই যুবকের পিতা মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার মনোয়ার হোসেন।

জানা গেছে, সম্প্রতি বকশীগঞ্জ উপজেলার বগারচর ইউনিয়নে ভয়াবহ বন্যায় শুরু হলে বগারচর ইউনিয়নের ডাকপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার মনোয়ার হোসেনের ছেলে ফহিম আহাম্মেদ স্থানীয় নঈম মিয়ার বাজার এলাকায় অবস্থিত ডেফোডিল প্রিপারেটিরী উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেন। পাশবর্তী আলীরপাড়া নিলেরচর গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে মাসুদ মিয়াও সেখানে আশ্রয় নেন।

গত ২২ জুলাই রাতে মাসুদ মিয়ার কিছু টাকা হারিয়ে গেলে এই টাকা ফহিম আহাম্মেদ চুুরি করেছে বলে অভিযোগ করা হয়। কিন্তু ফহিম আহাম্মেদ টাকা চুরির বিষয়টি অস্বীকার করেন। এরপর ২৩ জুলাই মাসুদ মিয়া ও আরো দুই তিন জন মিলে ফহিম আহাম্মেদকে টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে দুই হাত শেকল দিয়ে বেঁধে বেধক লাঠি পেটা করতে থাকে। এ সময় ফহিম আহাম্মেদ মার খেয়েও চুরির বিষয়টি অস্বীকার করেন কিন্তু তারা লাঠি পেটা করতেই থাকে। খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার মনোয়ার হোসেন তার ছেলেকে উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন এবং তার ছেলেকে মারধরের বিচার পেয়ে ঐদিনই বকশীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। লাঠিপেটার এ দৃশ্যটি ঘটনার তিন দিন পর ভাইরাল হলে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অনেকেই এই নারকীয় এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি করেন।

ভিডিওটি ভাইরালের পরই নড়েচড়ে বসে থানা পুলিশ। ২৬ জুলাই রাতেই থানা পুলিশ জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান শুরু করে। রাতভর অভিযান চালিয়ে ডাকপাড়া গ্রামের জাফর উদ্দিনের ছেলে সওদাগর (৩৫) এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়।

বকশীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) তাহেরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় একজনে আটক করা হয়েছে । বাকিদেরও শিগগিরই আটক করা হবে।

এগিকে ফহিমের পরিবার জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।