জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চলে বালুর পাইপ ভেঙে কৃষকের মৃত্যু

জামালপুরে সুলতাননগর গ্রামে বালু তোলার লোহার পাইপ দুর্ঘটনায় নিহত কৃষকের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) লোকমান হোসেন। ছবি : বাংলারচিঠি ডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠি ডটকম

জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চলে আকস্মিক বালু উত্তোলনের লোহার পাইপ ভেঙে নিহত কৃষক মো. নজরুল ইসলামের (৩৫) পরিবারকে ১৯ ফেব্রুয়ারি ক্ষতিপূরণ হিসেবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নগদ তিন লাখ টাকা, অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ নগদ এক লাখ টাকা এবং নিহতের স্ত্রীকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসন। স্থানীয় সুলতাননগর গ্রামের ওই কৃষক ১৮ ফেব্রুয়ারি দিনে ধানক্ষেতে কাজ করার সময় এ দুর্ঘটনার শিকার হয়ে রাতে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৮ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে কৃষক নজরুল ইসলাম খান তার ধান ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন। এ সময় তার জমির ওপর দিয়ে যাওয়া জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চলের মাটিভরাট কাজের ঠিকাদার এমএম বিল্ডার্সের বালু উত্তোলনের বিশাল আকৃতির পাইপ আকস্মিক ভেঙে তার মাথায় লেগে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জামালপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। রাত ১০টার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।

তার মৃত্যুর খবরে স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। কৃষক মৃত্যুর ঘটনায় তারা ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। খবর পেয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) লোকমান হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াছমিন ও তিতপল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন-অর রশিদ, নারায়নপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আব্দুল লতিফ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। পরে গ্রামবাসী ও নিহতের পরিবারের সদস্যদের সাথে আলোচনা করে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) লোকমান হোসেনের মধ্যস্থতায় ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্সের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা বারেক বিশ্বাস নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ নগদ তিন লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা দেন।

এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) লোকমান হোসেন স্থানীয়দের উদ্দেশে বলেন, প্রতিটিই দুর্ঘটনা অনাকাঙ্খিত। কিন্তু এই দুর্ঘটনাটি কিভাবে ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হবে। তিনি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল (বেজা) কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নগদ এক লাখ টাকা দেন এবং নিহত কৃষকের স্ত্রী মাজেদা বেগমকে জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থায়ীভাবে চাকরির ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিলে স্বজনরা মরদেহ নিয়ে যান এবং পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেন।