খাদ্যের সন্ধানে শেরপুর সীমান্তে ফের হাতির তাণ্ডব, নির্ঘুম রাত কাটছে এলাকাবাসীর

বন্যহাতির পাল। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর

খাদ্যের সন্ধানে শেরপুরের সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ীর গারো পাহাড়ে আবারো বন্যহাতির পাল তাণ্ডব শুরু করেছে। স্থানীয়রা বলছেন, উপজেলার পাহাড়ি জনপদে কয়েক দিন ধরে বিচরণ করছে ভারত থেকে নেমে আসা অর্ধশতাধিক বন্যহাতি। জানমাল রক্ষার্থে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন তারা। অন্যদিকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

নাকুগাঁও স্থলবন্দর এলাকার আশরাফ আলী বলেন, এক সময় সীমান্ত এলাকার মানুষজন হাতির কবল থেকে ফসল বাঁচাতে রাত জেগে পাহারা দিতো। আর এখন হাতির উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই ফসল পাহারা দিতে হচ্ছে। এসব বন্যহাতি গভীর অরণ্য থেকে শুধু ফসলের খেতেই নয়, মাঝে মধ্যে সীমান্ত সড়কেও উঠে আসে। তখন যানবাহন চলাচল এবং সাধারণ মানুষের চলাফেরা চরমভাবে বিঘ্নিত হয়ে পড়ে। এসব কারণে সীমান্ত এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

স্থানীয় আকবর মিয়া বলেন, কয়েক বছর আগে ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে বন্যহাতির দল বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। ওইসব হাতি খাবারের খোঁজে জেলার সীমান্তবর্তী শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড় এলাকায় বিচরণ করে আসছে। সবশেষ গত এক মাস ধরে নালিতাবাড়ীর পাহাড়ি গ্রাম দাওধারা কাটাবাড়ি ও নাকুগাঁও এলাকায় অবস্থান করছে ৬০-৭০টি বন্যহাতি।

স্থানীয় কৃষক আলী হোসেন বলেন, প্রতি বছরই বন্যহাতির দল ফসল ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করছে। হাতির অত্যাচারে কোনো বছর ঠিকমতো ফসল ঘরে তুলতে পারি না। বন্যহাতির কাছে অসহায় হয়ে গেছি। হাতির তাণ্ডবে নির্ঘুম রাত কাটে।

ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান ও এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্য বিজার কুবির বলেন, প্রশাসনের তরফ থেকে হাতির খাদ্যের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। আর রাতে হাতি তাড়াতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টর্চ লাইট পাওয়া গেলে ভালো হতো।

ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, হাতির হামলা ঠেকাতে এডিবির সহযোগিতায় একটি জেনারেটরের মাধ্যমে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে হাতি আলো দেখে ফসলের জমিতে না নামতে পারে।

মধুটিলা ইকোপার্কের রেঞ্জার রফিকুল ইসলাম বলেন, হাতির দল দাওধারা কাটাবাড়ি ও নাকুগাঁও এলাকার টিলায় অবস্থান করছে। হাতির পালটিকে কেউ যেন বিরক্ত করতে না পারেন, সে জন্য সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

ইউএনও ইলিশায় রিছিল বলেন, হাতির অভয়াশ্রম ও খাদ্যের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে কাজ করছে বন বিভাগ।