শেরপুরে প্রার্থনায় শেষ হলো ফাতেমা রাণীর তীর্থ উৎসব

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম : শেরপুরের নালিতাবাড়ী বারমারী খ্রিস্টান ধর্মপল্লীতে অনুষ্ঠিত দুইদিনব্যাপী ফাতেমা রাণীর তীর্থ উৎসব মূলপ্রার্থনার (খ্রিস্টযাগ) মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। ‘ভ্রাতৃত্ব ও মিলন সমাজ গঠনে ফাতেমা রাণী মা মারিয়া’ এই মূল সুরে তীর্থ উৎসব ২৯ অক্টোবর বিকালে সমাপ্তি হয়।

এর আগে ২৮ অক্টোবর দুপুরে পূণর্মিলন, পাপ স্বীকার এবং বিকেলে পবিত্র খ্রিস্টযাগের মধ্য দিয়ে তীর্থ উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পরে রাতে আলোক শোভাযাত্রা, আরাধ্য সাক্রান্তের আরাধনা, নিরাময় অনুষ্ঠান ও নিশি জাগরণের মধ্যদিয়ে শুরু হয় প্রথম দিনের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান।

এ অনুষ্ঠানে দেশ ও বিদেশ থেকে আসা প্রায় ৪০ হাজার রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টভক্ত যোগ দেন।

তীর্থ উৎসবের সমন্বয়কারী রেভারেন্ড ফাদার তরুণ বানোয়ারী জানান, দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা খ্রিস্টভক্তরা নিজেদের পাপ মোচনে মোমবাতি জ্বালিয়ে আলোর মিছিলে অংশ গ্রহন করেন। এসময় প্রায় দুই কিলোমিটার পাহাড়ি ক্রুশের পথ অতিক্রম শেষে মা-মারিয়ার প্রতিকৃতির সামনে সমবেত হয়ে ভক্তি শ্রদ্ধা জানিয়ে অকৃপণ সাহায্য প্রার্থনা করেন ক্যাথলিক ভক্তরা। ২৯ অক্টোবর জীবন্ত ক্রুশের পথ অতিক্রম ও মহা খ্রিস্টযাগের মধ্যদিয়ে দুইদিনব্যাপী তীর্থ উৎসবের সমাপ্তি হয়।

রাজশাহী ক্যাথলিক খ্রিস্ট ধর্মপ্রদেশ বিশপ জের্ভাস রোজারিও বলেন, এবারের তীর্থযাত্রায় বিশ^ মানবতার কল্যাণে বিশেষ করে বাংলাদেশের সকল সমস্যার সমাধানের জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে। সকল ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে দিন দিন তীর্থ উৎসবটি এখন সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে।

তিনি আরও জানান, শেরপুরের বারমারী সাধু লিওর খ্রিস্টান ধর্মপল্লীতে ফাতেমা রাণীর তীর্থস্থানটি পর্তুগালের ফাতেমা নগরের আদলে ও অনুকরণে ১৯৯৮ সালে স্থাপিত হয়। সেই থেকেই ফাতেমা রাণীর করুণা ও দয়া লাভের আশায় বিশে^র বিভিন্ন দেশ থেকে তীর্থযাত্রীরা এখানে সমবেত হয় নিজেদের পাপ মোচনের জন্য।

তীর্থ উৎসবে আগতদের নিরাপত্তা দিতে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য নিয়োজিত ছিল বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদ এবং পুলিশ সুপার হাসান নাহিদ চৌধুরী।