সাজানো হয়েছে বাড়িঘর, বিয়ের গেট ও প্যান্ডেল। বাজানো হচ্ছিল বিয়ের বাদ্য। অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য তৈরি হয়েছে সব মুখরোচক খাবার। চারদিকে হৈচৈ। সবাই হাসিখুশি। ১৩ বছরের স্কুলছাত্রী মেয়েকে কনে সাজিয়ে বসানো হয়েছে বিয়ের পিঁড়িতে। একটু পরই মালাবদল। এর মধ্যেই পুলিশ হাজির হয়ে পণ্ড করে দেন বাল্যবিয়ের আয়োজন।
ততক্ষণে বিয়ের বর, তার আত্মীয়-স্বজন এবং কনে পক্ষের লোকজন পালিয়ে যায়। ১২ মে সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার সিধুলী ইউনিয়নের বীর ভাটিয়ানি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ছাত্রীর বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে না দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে অভিভাবকের মুচলেকা নেয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার লিখন চন্দ্র দাসের মেয়েকে মাদারগঞ্জে এনে প্রয়াত দিনেশ চন্দ্র দাসের ছেলের কমল চন্দ্র দাসের (২৫) সঙ্গে বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। বর-কনের উভয় পরিবারের সম্মতিতে আয়োজন প্রায় শেষপর্যায়ে ছিল। বাড়ির গেট ছিল সুসজ্জিত। তৈরি ছিল বিয়ের প্যান্ডেল ও আপ্যায়নের ব্যবস্থা। বিয়ের এমন আয়োজন দেখে বিষয়টি স্থানীয়দের সন্দেহ হয়।
তারা জানতে পারেন, মেয়েটির বয়স এখনও ১৮ বছর হয়নি। পরে মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিমের মাধ্যমে বিষয়টি মাদারগঞ্জ থানা পুলিশকে জানানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ বাল্যবিয়ের আয়োজন পণ্ড করে দেয়।
মাদারগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান আল মামুন এ প্রতিবেদককে বলেন, বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে কালিবাড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. জিয়াকে ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পাঠাই। পুলিশ উপস্থিত হলে বর পক্ষ ও কনে পক্ষের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পুলিশ তৎপর হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে উভয় পক্ষকে ডেকে এনে মেয়েটির বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে না দেওয়ার বিষয়ে লিখিত মুচলেকা নেয়া হয়।