ঢাকা ০৮:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ভারতে বিশ্বনবীকে অবমাননার ঘটনায় বকশীগঞ্জে তৌহিদী জনতার প্রতিবাদ মিছিল দল বা ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে আর বিভক্ত হতে দেব না : ডা. শফিকুর রহমান সফররত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার একান্ত বৈঠক ৫ বছর পর জুমার খুতবা, মুসলমানদের উদ্দেশে যে বার্তা দিলেন খামেনি যুক্তরাষ্ট্রে হারিকেন হেলেনের আঘাতে মৃতের সংখ্যা ২১০ ছাড়িয়েছে দক্ষিণ বৈরুতে ইসরাইলের টানা ১১ বিমান হামলা টিউবওয়েলপাড়ে ট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশা বিধ্বস্ত, মাদরাসা শিক্ষকসহ নিহত ৩ ভারতে হযরত মুহাম্মদকে (সা.) অবমাননার প্রতিবাদে জামালপুরে বিক্ষোভ চিনি শিল্পের কৃষি বিভাগকে রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তের দাবিতে জিল বাংলায় মানববন্ধন সাইনবোর্ডবিহীন জামালপুর রেলওয়ে স্টেশন, স্টেশন মাস্টার বললেন বাজেট নেই

২০০ কোটি ডলারের বেশি নতুন সহায়তার প্রতিশ্রুতি বিশ্বব্যাংকের

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংক চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জন্য ঋণ সহায়তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে।

১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক।

এসময় বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান বলেন, চলতি অর্থবছরে তার সংস্থা বাংলাদেশের জন্য দুই শ’ কোটি মার্কিন ডলারের নতুন অর্থায়ন করতে পারবে। এই অর্থ অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন, বন্যা মোকাবিলা, দূষণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বায়ুর মান বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে সহায়তা করা হবে।

জরুরিভাবে আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে এমন ক্ষেত্রে সহায়তা করা হবে উল্লেখ করে আবদৌলায়ে সেক বলেন, ‘আমরা যত দ্রুত সম্ভব এবং যতটা সম্ভব আপনাদের সহায়তা করতে চাই।’

বৈঠকে নতুন ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার অনুরোধের প্রেক্ষিতে সংস্থাটি সরকারের চলমান বিদ্যমান প্রকল্পে প্রায় এক শ’ কোটি ডলারের অতিরিক্ত এক শ’ কোটি ডলারের তহবিল পুনর্বিন্যাসের কথা উল্লেখ করা হয়।

বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান জানান, অতিরিক্ত ঋণ প্রদানের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক এবারের অর্থবছরে বাংলাদেশকে সহশর্তের ঋণ এবং মঞ্জুরি মিলিয়ে প্রায় তিন শ’ কোটি মার্কিন ডলার প্রদান করবে, যার মাধ্যমে বিদ্যমান প্রকল্পসমূহের তহবিল পুনর্বিন্যাসও করা হবে।

সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন বাংলাদেশের তরুণ সম্প্রদায় এবং দেশটির জন্য ‘মহৎ কাজ’ হবে উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান বলেন, প্রতিবছর যে ২০ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে, তারাও এর সুফল পাবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরক্টেরকে উদ্দেশে করে বলেন, ১৫ বছরের অপশাসন থেকে ঘুরে দাঁড়াতে আমরা যে নতুন যাত্রার সূচনা করেছি তাকে এগিয়ে নিতে এবং সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাংকের ঋণ তহবিলসমূহের শর্তে নমনীয় হতে হবে।

তিনি এই বহুপাক্ষিক ঋণ প্রদানকারী সংস্থাকে উদ্দেশে করে আরও বলেন, ‘আমাদের ধ্বংসাবশেষ থেকে নতুন কাঠামো তৈরি করতে হচ্ছে। আমাদের এখন বড় ধাক্কা দেওয়ার প্রয়োজন এবং ছাত্রদের যে স্বপ্ন রয়েছে তা পূরণে মনোযোগ দিতে হবে।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি আপনাদের বলবো- আমাদের সাহায্য করুন। আমাদের টিমের অংশীদার হোন।’

অধ্যাপক ইউনুস বলেন, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার শাসন আমলে দুর্নীতিবাজরা অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে কয়েক বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। পাচার হওয়া এসব অর্থ ফিরিয়ে আনতে তিনি বিশ্বব্যাংককে কারিগরি সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানান।

বিশ্বব্যাংকের কাছে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার মতো প্রযুক্তি রয়েছে উল্লেখ করে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, দেশে দুর্নীতিকে শূন্যের পর্যায়ে নামিয়ে আনতে ব্যাংক দক্ষতার প্রয়োজন।

বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সহায়তা করতে সম্মত হন। তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের সাহায্য করতে পেরে খুশি হবো।’

তিনি আরো বলেন, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে পরিসংখ্যানগত তথ্যের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা তৈরি, কর আহরণে অটোমেশন চালু এবং আর্থিক খাত সংস্কারে সহায়তা করতে চাই।

বৈঠকে অধ্যাপক ইউনুস বলেন, বাংলাদেশ তার প্রতিষ্ঠানগুলো মেরামত এবং মোটা দাগের সংস্কার করার এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাই না। তিনি বলেন, ‘একবার এ সুযোগ হারালে কখনো তা আর ফিরে আসবে না।’

আবদৌলায়ে সেক জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের শহিদদের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি ঢাকার দেয়ালে তরুণদের আঁকা বর্ণিল গ্রাফিতি ও ম্যুরাল দেখে মুগ্ধ হয়েছেন উল্লেখ করে বলেছেন, ৩০ বছরের চাকরি জীবনে অন্য কোথাও এমন দেখিনি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ছাত্রদেরকে ক্ষমতায়ন করতে হবে।’সূত্র:বাসস।

জনপ্রিয় সংবাদ

ভারতে বিশ্বনবীকে অবমাননার ঘটনায় বকশীগঞ্জে তৌহিদী জনতার প্রতিবাদ মিছিল

২০০ কোটি ডলারের বেশি নতুন সহায়তার প্রতিশ্রুতি বিশ্বব্যাংকের

আপডেট সময় ০৭:০৯:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংক চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জন্য ঋণ সহায়তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে।

১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক।

এসময় বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান বলেন, চলতি অর্থবছরে তার সংস্থা বাংলাদেশের জন্য দুই শ’ কোটি মার্কিন ডলারের নতুন অর্থায়ন করতে পারবে। এই অর্থ অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন, বন্যা মোকাবিলা, দূষণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বায়ুর মান বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে সহায়তা করা হবে।

জরুরিভাবে আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে এমন ক্ষেত্রে সহায়তা করা হবে উল্লেখ করে আবদৌলায়ে সেক বলেন, ‘আমরা যত দ্রুত সম্ভব এবং যতটা সম্ভব আপনাদের সহায়তা করতে চাই।’

বৈঠকে নতুন ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার অনুরোধের প্রেক্ষিতে সংস্থাটি সরকারের চলমান বিদ্যমান প্রকল্পে প্রায় এক শ’ কোটি ডলারের অতিরিক্ত এক শ’ কোটি ডলারের তহবিল পুনর্বিন্যাসের কথা উল্লেখ করা হয়।

বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান জানান, অতিরিক্ত ঋণ প্রদানের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক এবারের অর্থবছরে বাংলাদেশকে সহশর্তের ঋণ এবং মঞ্জুরি মিলিয়ে প্রায় তিন শ’ কোটি মার্কিন ডলার প্রদান করবে, যার মাধ্যমে বিদ্যমান প্রকল্পসমূহের তহবিল পুনর্বিন্যাসও করা হবে।

সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন বাংলাদেশের তরুণ সম্প্রদায় এবং দেশটির জন্য ‘মহৎ কাজ’ হবে উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান বলেন, প্রতিবছর যে ২০ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে, তারাও এর সুফল পাবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরক্টেরকে উদ্দেশে করে বলেন, ১৫ বছরের অপশাসন থেকে ঘুরে দাঁড়াতে আমরা যে নতুন যাত্রার সূচনা করেছি তাকে এগিয়ে নিতে এবং সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাংকের ঋণ তহবিলসমূহের শর্তে নমনীয় হতে হবে।

তিনি এই বহুপাক্ষিক ঋণ প্রদানকারী সংস্থাকে উদ্দেশে করে আরও বলেন, ‘আমাদের ধ্বংসাবশেষ থেকে নতুন কাঠামো তৈরি করতে হচ্ছে। আমাদের এখন বড় ধাক্কা দেওয়ার প্রয়োজন এবং ছাত্রদের যে স্বপ্ন রয়েছে তা পূরণে মনোযোগ দিতে হবে।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি আপনাদের বলবো- আমাদের সাহায্য করুন। আমাদের টিমের অংশীদার হোন।’

অধ্যাপক ইউনুস বলেন, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার শাসন আমলে দুর্নীতিবাজরা অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে কয়েক বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। পাচার হওয়া এসব অর্থ ফিরিয়ে আনতে তিনি বিশ্বব্যাংককে কারিগরি সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানান।

বিশ্বব্যাংকের কাছে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার মতো প্রযুক্তি রয়েছে উল্লেখ করে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, দেশে দুর্নীতিকে শূন্যের পর্যায়ে নামিয়ে আনতে ব্যাংক দক্ষতার প্রয়োজন।

বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সহায়তা করতে সম্মত হন। তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের সাহায্য করতে পেরে খুশি হবো।’

তিনি আরো বলেন, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে পরিসংখ্যানগত তথ্যের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা তৈরি, কর আহরণে অটোমেশন চালু এবং আর্থিক খাত সংস্কারে সহায়তা করতে চাই।

বৈঠকে অধ্যাপক ইউনুস বলেন, বাংলাদেশ তার প্রতিষ্ঠানগুলো মেরামত এবং মোটা দাগের সংস্কার করার এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাই না। তিনি বলেন, ‘একবার এ সুযোগ হারালে কখনো তা আর ফিরে আসবে না।’

আবদৌলায়ে সেক জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের শহিদদের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি ঢাকার দেয়ালে তরুণদের আঁকা বর্ণিল গ্রাফিতি ও ম্যুরাল দেখে মুগ্ধ হয়েছেন উল্লেখ করে বলেছেন, ৩০ বছরের চাকরি জীবনে অন্য কোথাও এমন দেখিনি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ছাত্রদেরকে ক্ষমতায়ন করতে হবে।’সূত্র:বাসস।