মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় নতুন একটি মুক্তিযুদ্ধের দরকার, জামালপুরে সভায় বক্তারা

সভায় বক্তব্য রাখেন উন্নয়ন সংঘের নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল আলম মোল্লা। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম

সর্বস্তরে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে নতুন করে একটি মুক্তিযুদ্ধের দরকার। সকল প্রকার অপরাধ নির্মূলে গণজাগরণ তৈরি করতে হলেও সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ১৫ মে জামালপুরে হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার নেটওয়ার্কের ত্রৈমাসিক সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর সেলিম।

উন্নয়ন সংঘের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ডিটিআরসির শেওলা সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল আলম মোল্লা। সভায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন জামালপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের জেলা বিশেষ শাখার (ডিএসবি) পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম সম্রাট, প্রবেশন কর্মকর্তা আব্দুছ সালাম, জামালপুর পৌরসভার কাউন্সিলর নাসরিন আক্তার, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী টিপু সুলতান, প্রকল্প কর্মকর্তা রুমা বেগম, এইচআরডি নেটওয়ার্কের যুগ্ম-আহ্বায়ক আসমাউল আসিফ, সদস্য সুমী, মিলি প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এইচআরডি নেটওয়ার্কের সদস্য সচিব আরজু আহম্মেদ।

সভায় বক্তব্য রাখেন ডিএসবির পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম সম্রাট। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সকল প্রকার সহিংসতার বিরুদ্ধে গণজাগরণ তৈরি করা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনমুক্ত একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন জামালপুরে হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারদের নিয়ে কাজ শুরু করে। উন্নয়ন সংঘ সাচিবিক দায়িত্ব পালন করছে।

সভায় বক্তব্য রাখেন এমএসএফ এর সমন্বয়কারী টিপু সুলতান।ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সভা সূত্র জানায়, গত তিনমাসে জামালপুরে মানবাধিকার সংরক্ষণে এইচআরডি নেটওয়ার্ক ২৬টি লঙ্ঘিত ঘটনা উদঘাটন ও প্রতিবেদন তৈরি করেছে। ১৬ জনকে আইনি সহায়তা দিয়েছে। মানববন্ধন ১, প্রতিবাদ সমাবেশ ১, র্যা লি ১, সংবাদ সম্মেলন ৩, বিভিন্ন সভায় অংশগ্রহণ ১৬, উপজেলা সমন্বয় সভা ৩, নির্যাতনের শিকার ১০ জনকে সহায়তা, ৫২ জন ডিফেন্ডারের সাথে যোগাযোগ, পাচার ও হারিয়ে যাওয়া ৯ জন শিশুকে উদ্ধার করে অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়েছে ৮ জনকে। জেলা লিগ্যাল এইডে ৪টি মামলা রজু করাতে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। পারিবারিক সুরক্ষা আইনের আওতায় আনা হয়েছে ৬ জনকে। অপহরণ থেকে উদ্ধারে সহায়তা করা হয়েছে ১ জনকে।

সভায় বক্তব্য রাখেন এইচআরডি নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর সেলিম। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

বক্তারা নেটওয়ার্কের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, সমাজ থেকে অপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে প্রত্যেক কর্মীকে মুক্তিযোদ্ধার ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। ৫৩ বছর আগে দেশ স্বাধীন হলেও মানুষের সর্বজনীন মুক্তি আসেনি। শুধু পুলিশের ওপর নির্ভর করে সমাজে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে মুক্তির লাড়াইয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে পারলে সমাজ থেকে নারী, শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, অপহরণ, খুন জখম, লুটতরাজ, বাল্যবিয়ে, মাদক, ছিনতাই, রাহাজানী, ভূমিদস্যুতামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে গণজাগরণ ও জনসচেতনা তৈরি সময়ের একান্ত দাবি বলে বক্তারা অভিমত প্রকাশ করেন।