শেরপুরে কিশোরী অপহরণ ও ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় ২৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামি গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার দুই আসামি।

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম: শেরপুরের শ্রীবর্দীতে চাঞ্চল্যকর কিশোরী অপহরণ ও ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় ৯ বছর আত্মগোপনে থাকা ২৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১৪। ৮ জুলাই সকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে সংস্থাটি।

গ্রেপ্তাররা হলেন উপজেলার উত্তর শ্রীবর্দী গ্রামের শমসের আলীর ছেলে আমের আলী (৪০) ও ছনকান্দা বেপারীপাড়া গ্রামের সুরুজ আলীর ছেলে কাশেম (৩৫)।

র‌্যাবের জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান জানান, ভিকটিম একজন স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী। ২০১৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে আমের আলী ও কাশেম ওই ছাত্রীদের বাড়ি ভাড়া নেয়ার জন্য যায়। একই দিন ভিকটিম তার নানার বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে ওই দুইজন তার পিছু নেয়। ছাত্রীটি মুন্সিপাড়া এলাকার স্থানীয় আজাদের বাড়ির সামনে পৌঁছা মাত্র আমের ও কাশেম তাকে জোরপূর্বক অপহরণসহ ধর্ষণের উদ্দেশ্যে ছাত্রীর গলায় থাকা উড়না দিয়ে তার মুখ বেঁধে অটোরিকশা দিয়ে কর্ণজোড়া সড়কে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ওই ছাত্রী বাড়িতে না ফেরায় স্বজনরা তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি শুরু করে। একপর্যায়ে ছাত্রীটির বাবার মোবাইলে স্থানীয় একজন প্রতিবেশী জানায় তার মেয়ে কাকিকুল ব্রিজের পাশে পড়ে আছে। পরে ওই ছাত্রী জানায় আমের ও কাশেম তাকে অপহরণ করে কুলগাঁও পাহাড়ে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। তার ডাকচিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ওই দুই অপহরণকারী পালিয়ে যায় এবং স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে।

স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান বলেন, এরপর ছাত্রীর বাবা কামরুজ্জামান বাদী হয়ে দুইজন আসামির নাম উল্লেখ করে অপহরণসহ ধর্ষণের চেষ্টা অভিযোগে শ্রীবর্দী থানায় মামলা দায়ের করে। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

এরপর মামলার নানা ধরনের কার্যক্রম শেষে ২০২১ সালে ২৩ মার্চ শেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক ও তৎকালিন জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামান অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় সংশ্লিষ্ট আইনের পৃথক পৃথক ধারায় উভয় আসামিকে ২৪ বছরের সাজা ঘোষণা করেন।

স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান আরও বলেন, মামলার ঘটনার পর থেকেই আসামিরা গ্রেপ্তার এড়াতে ৯ বছর আত্মগোপনে ছিল। পরে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এম এম সবুজ রানার উপস্থিতিতে র‌্যাবের একটি অভিযানিক দল ৭ জুলাই রাতে ছনকান্দা ব্যাপারীপাড়া এলাকা থেকে সাজাপ্রাপ্ত কাশেমকে গ্রেপ্তার করে। অন্যদিকে একই দিন রাতে জেলা শহরের খোয়ারপাড় এলাকা থেকে আমের আলী গ্রেপ্তার হয়। পরে উভয় আসামিকে শ্রীবর্দী থানায় হস্তান্তর করা হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শ্রীবর্দী থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, সাজাপ্রাপ্ত কাশেম ও আমের আলীকে ৮ জুলাই দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়।