বাংলাদেশের প্রতি শিক্ষার্থীদের আনুগত্য থাকতে হবে : মির্জা আজম এমপি

নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বশেফমুবিপ্রবি’র প্রতিষ্ঠাতা মির্জা আজম এমপি। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেছেন, এই বাংলাদেশের মানুষের ট্যাক্সের টাকায় সামান্য খরচে তোমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছো। পড়ালেখা করে শুধুমাত্র ভালো রেজাল্ট করে নিজের জীবনের কর্মসংস্থানই নয়, মনে রাখতে হবে এটা বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশকে অর্জন করতে ৩০ লাখ মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। দুই লাখ ৭০ হাজার মা-বোনের সম্ভ্রমহানি হয়েছে। সেই শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা থাকতে হবে। বাংলাদেশের প্রতি শিক্ষার্থীদের আনুগত্য থাকতে হবে।

তিনি ১১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে জামালপুরের মেলান্দহে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, আজকে বাংলাদেশ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আর স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি। বিশ্বের কোথাও স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনীতি করার কিন্তু সুযোগ নেই। আজকে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি তারাও কিন্তু এই দেশে রাজনীতি করছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির যে সংখ্যা ছিল, আজকে স্বাধীনতার ৫২ বছর পর তারা কিন্তু অনেক বেশি শক্তিশালী। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক শক্তি বিশেষ করে সেই মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি পাকিস্তানের পক্ষ থেকে তাদেরকে আজো সবধরনের পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের কিন্তু সেই বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার জন্য জাতির পিতা শেখ মুজিব তাঁর জীবন যৌবনের চার হাজার ৬৮২ দিন কারাগারে কাটিয়েছেন। বারবার তিনি মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন এই বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য। শিক্ষার্থীদের কিন্তু বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। তাঁর ইতিহাস জানতে হবে। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বই পড়তে হবে। তাহলে বোঝা যাবে এই বাংলাদেশটা কিভাবে এসেছে।

মির্জা আজম বলেন, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব শুধু বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনীই নন, সরাসরি সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও তিনি বঙ্গবন্ধুকে সহযোগিতা করেছেন। সেই বঙ্গমাতার নামের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে এই বাংলাদেশের জন্য, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য অবদান রাখতে হবে। তোমাদেরকে জানতে হবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। পরবর্তী প্রজন্মকেও মক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে হবে।

উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামরুল আলম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বশেফমুবিপ্রবি’র রেজিস্ট্রার সৈয়দ ফারুক হোসেন। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক কর্নেল (অব:) কাজী শরিফ উদ্দিন, ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক এস এম ইউসুফ আলী, ফিসারিজ বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক ড. আব্দুস ছাত্তার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ, মেলান্দহ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান, মেলান্দহ পৌরসভার মেয়র মো. শফিক জাহেদী রবিন, সাবেক মেয়র হাজি দিদার পাশা, জামালপুর পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন, মেলান্দহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও সাধারণ সম্পাদক মো. জিন্নাহ, বশেফমুবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ইরফান ফকির ও তাইফুল ইসলাম পলাশ প্রমুখ।

আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন সহকারী অধ্যাপক পার্থ সারথী দাস ও প্রভাষক ইলিয়াস উদ্দিন। পরে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিকৃত ছয়টি বিভাগের ২২৮ জন নবীন ছাত্র-ছাত্রীকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। রাতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।