কোনো অবস্থাতেই জামালপুর সদর আসন বিএনপির হাতে ছেড়ে দেওয়া যাবে না : ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী

শরিফপুরে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুর সদরের শরিফপুরে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী বলেছেন, আজকে আমি দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কিছু শীতবস্ত্র নিয়ে এসেছি। এখানে উদ্দেশ্য দুটি। আপনাদের মাঝে শেখ হাসিনার নির্দেশ বাস্তবায়ন করা। পাশাপাশি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর সদর আসনে আমি প্রার্থী হতে চাই। তাই আপনাদের কাছে দোয়া চাই। সহযোগিতা চাই। আপনারা দোয়া করলে আমি বিশ্বাস করি জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিবেন।

তিনি আরো বলেন, আগামী নির্বাচনে আমাকে যদি মনোনয়ন নাও দেন। আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত একজন কর্মী হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনা সদর আসনে যাকেই মনোনয়ন দিবেন আমরা তাকেই বিজয়ী করবো। কোনো অবস্থাতেই সদর আসন বিএনপির হাতে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। আজকে যদি এই আসনটি বিএনপির হাতে চলে যায়। আর এই একটি আসনের জন্য যদি আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে না পারে তাহলে এ দেশের মানুষের ভাগ্যে দুর্যোগ নেমে আসবে।

২২ জানুয়ারি সকালে জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নে নিজস্ব অর্থায়নে স্থানীয় শীতার্ত ৪০০ জন দরিদ্র ও অসহায় নারী-পুরুষের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের বর্ণনা দিয়ে ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী বলেন, আমি ৪৭ বছর ধরে আপনাদের সাথে রয়েছি। ছাত্র রাজনীতি করেছি। আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। ১৯ বছর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে জেল, জুলুম, হুলিয়ার শিকার এই জেলায় আমার মতো আর কেউ হয় নাই। হয় নাই। খালেদা নিজামীর জোট সরকার, এরশাদ সরকার, সবকিছু মিলিয়ে যে স্ট্রিম রুলার আমার ওপর চালিয়েছে। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন করার জন্য কোনোদিনও পিছপা হই নাই। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে দীর্ঘদিন এই আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনার জন্য জামালপুর জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে বেরিয়েছি।

শরিফপুরে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

তিনি বলেন, তাই আপনারা যদি চান। রাজনীতি করার ইচ্ছা আমাদের আছে। শেখ হাসিনারও আছে। কিন্তু যখন রাজনীতিবিদরা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে যায়। তখন জননেত্রী শেখ হাসিনা বাধ্য হয়ে আওয়ামীমনা ব্যবসায়ীদেরকে জাতীয় সংসদে মনোনয়ন দেন। এই ব্যবসায়ীরা মনোনয়ন পেয়ে তারা আর জনগণের চিন্তা করেন না। তারা ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। তাই আপনাদের সাথে নিয়ে এই শীতবস্ত্র বিতরণের মধ্য দিয়ে আমরা শেখ হাসিনার কাছে দাবি উত্থাপন করতে চাই। ব্যবসায়ী নয়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনীতিবিদদের মনোনয়ন দিতে হবে। এটি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে জামালপুরবাসীর দাবি। এই সোচ্চার দাবি আপনাদের করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি তৃণমূল নেতারা যদি সোচ্চার থাকে আপনারা যাকে চাবেন জননেত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে তাকেই মনোনয়ন দিবেন।

ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যেকোনো পরিস্থিতিতেই দলের ঐক্য বজায় রাখতে হবে। বিগত নির্বাচনগুলোতে যেমন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী করেছি। আমাদের এই সদর আসন জননেত্রী শেখ হাসিনার ঘাঁটি। আগামী নির্বাচনেও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সদর থেকে সংসদ সদস্য উপহার দিবো। আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। মনোনয়নের জন্য অনেকেই চেষ্টা করবেন। সেই চেষ্টার মধ্যে আমিও একজন রয়েছি। আপনাদের যদি আমাকে পছন্দ হয়। আমার সাথে থাকবেন। আমি আপনাদের সাথে অতীতেও ছিলাম। বর্তমানে আছি। ভবিষ্যতেও আপনাদের সাথে থাকবো। আপনাদের সুখে দুখে আপনাদের পাশে থাকার চেষ্টা করবো।

দলে বিভক্তি সৃষ্টিকারী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আসুন নিজেদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলি। আর যারা এই সংগঠনকে দ্বিধাবিভক্ত করতে চায়। তাদেরকে সাবধান থাকতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে বিএনপি জামাতের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতির পিতা শেখ মুজিবের সুযোগ্যকন্যা যাকে মনোনয়ন দিবেন আমরা তাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আবারো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দিবো।