শেখ হাসিনার দেওয়া দায়িত্বে সফল মির্জা আজম

: মোহাম্মদ জাকিরুল ইসলাম :

আওয়ামী লীগের ২১তম সম্মেলনে দলীয় সভাপতি মির্জা আজমকে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ ঢাকা বিভাগের দায়িত্ব দেন।

ঢাকা বিভাগে আওয়ামী লীগের ১৭টি সাংগঠনিক জেলা রয়েছে। এর ভিতরে রয়েছে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, গাজীপুর মহানগর ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর। মির্জা আজম দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমে আওয়ামী লীগে একেবারে তৃণমূল থেকে ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু করেন।তাঁর ভাষায় ইউনিট বা কেন্দ্র কমিটি হচ্ছে ‘ভোট ব্যাংক’ ইউনিট কমিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। কারন এই ইউনিট কমিটিই ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট চাইবে এবং কেন্দ্র পাহারা দেবে। তার ধারাবাহিকতায় ইউনিট সম্মেলন শুরু করেন তিনি।

২০২১ সালে ২৯ মার্চ মাসে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত ৮০২টি ইউনিট কমিটির পরিচিতি সভার আয়োজন করা হয়। এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের অন্তর্গত ৬০০ টি ইউনিট কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন করেন মির্জা আজম।

ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মির্জা আজমের সাংগঠনিক দক্ষতা ও দিকনির্দেশনায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মিলে মোট ১৪০২টি ইউনিট কমিটি গঠন হয়েছে মির্জা আজমের নেতৃত্বে।

আওয়ামী লীগের ইতিহাসে এর আগে কখনো ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগে এভাবে সম্মেলনের মাধ্যমে ইউনিট কমিটি গঠন হয়নি। মির্জা আজমের নেতৃত্বের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে।

এরপর প্রায় প্রতিদিনই শুরু করেন ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন দলীয় কোন্দলও সামাল দেন সমানতালে।

সম্মেলন ছাড়া তৃণমূলে কোনো কমিটি না করতেও নির্দেশনা দিয়েছিলেন দলীয় প্রধান। আর বিদ্রোহীদের মধ্যে যারা পরে আবেদন করে দলের ক্ষমা পেয়েছেন, তাদের পদ দিলেও বড় দায়িত্ব দিতে না করা হয়েছিলো। দলীয় প্রধানের এই নির্দেশনা অক্ষরে অক্ষরে পালনের মাধ্যমে সংগনকে শক্তিশালী কাঠামোর উপর দাঁড় করাতে প্রাণপণ চেষ্টা করতে থাকেন ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।

ঢাকা বিভাগে চারটি মহানগরী রয়েছে- ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর মহানগরী। বাকি ১৩ জেলা হলো- ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী ও টাঙ্গাইল। এর মধ্যে ঢাকা মহানগ উত্তর ও দক্ষিণ ছাড়া বাকি ১৫ সাংগঠনিক জেলাই মেয়াদোত্তীর্ণ ছিলো। ঢাকা বিভাগে শতাধিক উপজেলা ও সাংগঠনিক থানা রয়েছে ২ শতাধিক। এর বেশির ভাগ কমিটিই মেয়াদোত্তীর্ণ ছিলো।

আওয়ামী লীগের ২২তম সম্মেলনকে সামনে রেখে ডিসেম্বরের আগেই এই বিভাগের সব জেলায় সম্মেলন শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে দিনরাত কাজ করেছেন ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলন ছাড়া ইউনিট,ওয়ার্ড, থানা/উপজেলা ও প্রায় সকল জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। এবং যাঁরা সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, যোগ্যতার ভিত্তিতে তাদের মধ্য থেকে পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাদের কমিটিতে রেখেছেন। তাঁর মতে বিগত ১৪ বছর যাবৎ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকায় জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের ব্যক্তিগত উন্নয়ন হয়েছে অনেক। কিন্তু দলের সাংগঠনিক উন্নয়ন তেমনটা হয়নি এমন সাহসী বক্তব্য দিয়ে ত্যাগী ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের দলে জায়গা করে দেওয়ার সুযোগসহ ঢাকা বিভাগ আওয়ামী লীগকে সুশৃঙ্খল ও শক্তিশালী কাঠামোর উপর দাঁড় করাতে সক্ষম হন।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম দায়িত্ব নেওয়ার আগে অনেক জেলা-উপজেলায় বছরের পর বছর বর্ধিত সভা, এমনকি কর্মী সভাও অনুষ্ঠিত হতোনা কিন্তু তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে সংগঠনকে একটি সাজানো বাগানে রূপান্তর করেছেন।

মির্জা আজমের সবচেয়ে বড় যোগ্যতা বা গুণ হলো তিনি সার্বক্ষণিক অর্থাৎ দিনরাত ২৪ ঘণ্টা রাজনীতির পিছনে সময় দেন। তিনি যে একজন ভালো সংগঠক সেটি তিনি প্রমাণ রেখেছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায়, আবার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েও তিনি তার যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছেন। ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়ে তিনি দল গোছানো, দলের কোন্দল নিরসনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৭৭ সালে ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে যে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন মির্জা আজম। তারপর আর পেছোনে ফিরে তাকাননি, তৃণমূল থেকে তিল তিল করে উঠে আসা একজন সফল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠ করেছেন বাংলার মানুষের কাছে। ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও জামালপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক-এর দায়িত্ব সফলভাবে পালন করেছেন।

২০০৩-২০১২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সফল সাধারন সম্পাদক হিসাবে রাজপথে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রাম,মেধা ও সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগকে সু-সংগঠিত করেছেন। তিনি পরপর তিনবার বাংলাদেশ আওয়ামীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর ৪৫ বছরের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে ৩৩ বছর যাবৎ মহান জাতীয় সংসদে জামালপুর- ৩ আসনের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তিনি বিরোধী দলীয় হুইপ, সরকার দলীয় হুইপ, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করেছেন। তিনি পাট ও বস্ত্রকে ইউটার্ণ করিয়েছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে ঢাকা বিভাগের দায়িত্ব পালন করছেন। এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা ও আওয়ামী লীগের সভাপতি দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য ঢাকা বিভাগ আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি ইউনিটকে শক্তিশালী ও সুসংগঠিত করেছেন মেধা ও সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে। যেমনটি করেছিলেন আওয়ামী যুবলীগে দায়িত্বে থাকা অবস্থায়।

মির্জা আজম এমপি যেখানে যে দায়িত্ব পেয়েছেন সেখানেই সফলতার পরিচয় দিয়েছেন।মির্জা আজম দায়িত্ব ও সংকট মোকাবিলায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশ পালনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত প্রাণ।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত এই ত্যাগী দেশপ্রেমী ও শিক্ষাপ্রেমী নেতা বাংলাদেশের মানুষের নিকট নেতৃত্বের এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে তিনি মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটির সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মির্জা আজম। ছয়বারের এমপি, জনপ্রিয়তায় তার সমকক্ষ আওয়ামী লীগের নেতা খুব কমই রয়েছে। সারাক্ষণ কর্মীদের নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। রাজনীতিতে সবকিছু সঁপে দেওয়া মির্জা আজমকে আওয়ামী লীগের দুর্দিনের ত্যাগী পরীক্ষিত ও নিবেদিত নেতা-কর্মীরা ২২তম সম্মেলনে আরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব প্রত্যাশা করে।