জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে সাংবাদিক সম্মেলন

সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইনজীবী মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ। ছবি : মাহমুদুল হাসান মুক্তা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম : দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর পর সোমবার ২৮ নভেম্বর জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে গোটা জেলায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে এক উৎসবমুখর পরিবেশ। এ উপলক্ষে সম্মেলনের একদিন আগে ২৭ নভেম্বর দুপুরে সম্মেলন স্থল জামালপুর জিলা স্কুল মাঠে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে সম্মেলন সফল করার নানাদিক তুলে ধরেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতেই জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির আহ্বায়ক জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ আতিকুর রহমান ছানা। তিনি জানান, দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর পর ২৮ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই সম্মেলনের আগে জামালপুর সদর উপজেলাসহ সাতটি উপজেলার মধ্যে পাঁচটি উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও জেলার ৬৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৯টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনও সম্পন্ন করা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের এবারের সম্মেলনকে সফল করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে নয়টি উপকমিটি দিনরাত কাজ করছে। জামালপুর জিলা স্কুল মাঠে বিশাল মঞ্চ নির্মাণসহ ইতিমধ্যে সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আইনজীবী মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি ও শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি, কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আক্তার পপি, রেমন্ড আড়েং, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, সাবেক ভূমিমন্ত্রী মো. রেজাউল করিম হীরা, আবুল কালাম আজাদ এমপি, বেগম হোসনে আরা এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মো. মোজাফফর হোসেন এমপি, জামালপুর পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখবেন। সম্মেলনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটবে বলেও জানান তিনি।

জামালপুর জিলা স্কুল মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের স্থাপন করা হয়েছে দলীয় প্রতীক নৌকার আদলে বিশাল সম্মেলন মঞ্চ। ছবি : আলী আকবর

সাংবাদিক সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আইনজীবী মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ বলেন, শুধু নেতা নির্বাচনই নয়, জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনটি মূলত স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামাতের দেশবিরোধী নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী একটি সম্মেলন হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, দেশের মানুষ শান্তিতে, স্বস্তিতে, সুখে এবং নিরাপদে আছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নমুখী গতিশীল সফল রাষ্ট্রনায়কোচিত মনোভাব নিয়ে দেশ পরিচালনা করে মানুষের পাশে রয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের একটি মহল যারা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ক্ষেপিয়ে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের সাথে কনফেডারেশন করতে চেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা রাতের অন্ধকারে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা, সেনাকর্মকর্তা, সৈনিক ও দেশপ্রেমিক নাগরিককে হত্যা করেছে। এতিমের টাকা আত্মসাতের দায়ে কারাদণ্ড ভোগ করছে। যারা বিদেশে টাকা পাচারের দায়ে দণ্ডিত হয়ে বিদেশে পলাতক জীবন যাপন করছে।

তিনি বলেন, আরেকটি দল যারা যুদ্ধাপরাধে অপরাধী, আন্তর্জাতিক গণহত্যা আইনে অপরাধী। যাদের বিচার করে আইনের কাঠগড়ায় দণ্ডিত করে ফাঁসির দণ্ডে এবং আমৃত্যু দণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। তারা সবাই নামে বেনামে এক ছাতার নিচে দাঁড়িয়ে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশের পরিবেশ নষ্ট করে। তারা ৭৫ এর হত্যাকাণ্ডের মতো আরেকবার হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যা করে তারা বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাতে চায়। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের এই সম্মেলনটি হচ্ছে এক ব্যাপক প্রতিবাদী সম্মেলন। প্রতিপক্ষ দলের বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ এমনকি ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় যে সমাবেশ আয়োজনের চেষ্টা করছে। তার বিরুদ্ধে একটি মহাসমাবেশে পরিণত হবে জামালপুরের এই সম্মেলন।