মেলান্দহে বোরো চাষে খরচ বাড়ায় বিপাকে কৃষক

মো. মুত্তাছিম বিল্লাহ, মেলান্দহ প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় বোরো ধান লাগানো শুরু হয়েছে। তবে বোরো ধান চাষে গত বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে খরচ। জমি প্রস্তুত করতে ডিজেল চালিত মেশিন, কীটনাশক ও ধান লাগানো শ্রমিকের মজুরিসহ দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।

গত বছর বোরো মৌসুমে বিঘা প্রতি ১২ হাজার থেকে ১৪ হাজার টাকা খরচ হলেও তা বেড়ে এ বছর ১৭ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা হবে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। অন্যদিকে এ মৌসুমে ধানের দাম নিয়েও শঙ্কায় রয়েছেন তারা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা বোরো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমি।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রচণ্ড শীতকে উপেক্ষা করে ধান লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ধান লাগাতে এসেছেন পার্শ্ববর্তী উপজেলার শ্রমিকরা।

উপজেলার মাহমুদপুরে ধান লাগাতে আসা মাদারগঞ্জের সোহাগ মিয়া নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের ওদিকে ধান লাগানো শেষ হয়েছে। এদিকে মজুরি বেশি তাই এখন এদিকে ধান লাগাতে এসেছি। বেলা তিনটার আগেই কাজ শেষ হবে। একদিনের মজুরি ৭০০ টাকা। তাই ওদিক থেকে এ এলাকায় এসেছি ধান লাগানোর জন্য।’

আরো একজন শ্রমিক বলেন, ‘এদিকে সব জায়গায় একসাথে ধান লাগানো শুরু হইছে। ধান লাগাতে বেশি দাম দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না লোক। এর জন্যই ধান লাগানোর কামলার (শ্রমিক) দাম বেড়েছে। কয়েকদিন পরেই আবার দাম কমে যাবে।’

ছবিলাপুর এলাকার কৃষক বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘সবকিছুর দাম বেড়েছে, ধানের চারা থেকে শুরু করে সার-বিষ, জমি হাল চাষ করতে দাম বেড়েছে। গত বছরে এক বিঘা জমিতে ধান লাগাতে খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা। আর এ বছরে এক বিঘা জমিতে প্রথম দিকেই ধান লাগাতে, ধানে চারা কিনা সার ও ধান লাগানো শ্রমিকের মজুরিসহ সব মিলে ১০ হাজার খরচ হয়ে গেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এখন বাকী আছে, ধান খেতে আগাছা পরিষ্কার করতে শ্রমিক লাগবে। সার বিষ দিতে হবে। তার পর ধান কাটা ও মাড়াই দিতে লাগবে শ্রমিক। সব মিলে এবার ১৮ থেকে ১৯ হাজার টাকা খরচ হবে বিঘা প্রতি। ধানে দাম কেমন হবে আল্লাহ জানে। ধানে দাম যদি না বেড়ে তাহলে লোকসান হবে।’

পাওয়ার টিলারের চালক মমিন মিয়া বলেন, ‘গতবছরের ডিজেলের দাম কম ছিল। তখন বিঘা প্রতি জমি হাল চাষ করতে ১৫শ টাকা করে করে নেওয়া হয়েছে। ডিজেলের দাম বেশি হয়েছে দাম বেড়েছে হাল চাষে। আমারা যদি দাম না বাড়াই তাহলে আমাদের লস হয়। তার জন্যই দাম কিছুটা বাড়াইছি।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল বলেন, ‘ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার বোরো ফসলের খরচ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের মাঝে বোরো ধানের বীজ দেওয়া হয়েছে। এবং ধান কাটার জন্য অর্ধেক দামে মেশিন দেওয়া হবে কৃষকদের। এবার বোরো ফসলে ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি আমরা।