দেওয়ানগঞ্জে তালগাছ প্রেমিক নুরউননেছা শাহীন

তালগাছের চারা রোপণ করছেন নুরউননেছা শাহিন। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

বিল্লাল হোসেন মন্ডল, দেওয়ানগঞ্জ প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম : ‘তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে-উঁকি মারে আকাশে’। এই কবিতাটি মনে করিয়ে দেয় আকাশমুখী এই গাছটির কথা। যদিও আজকাল গ্রাম বাংলায় দেখা যায় না অগণতি তালগাছের সারি। সময়ের পরিক্রমায় তালগাছের সংখ্যাও কমে গিয়ে আজ অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। বিলুপ্তির পথ থেকে বাঁচিয়ে রাখতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের মহিলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি নূরউননেছা শাহীন।

এই পরিবেশ সচেতন মানুষটি ২০২০ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে তালগাছ রোপণ শুরু করেছেন। বর্তমানে তার পরিচর্যায় প্রায় এক হাজার তালগাছ রয়েছে। ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বাড়ি, মসজিদ ও মাদরাসায় তালগাছ রোপণ করছেন তিনি। যেসব গাছ লাগালে সকলেই স্বল্প সময়ে বেশি লাভবান হবেন সেসব গাছ লাগিয়ে বাগান গড়ে তুলেন অধিকাংশ ব্যক্তি। কিন্তু তিনি তা না করে নিজ অর্থায়নে নিজ বাড়িতে তালগাছ রোপণ প্রকল্প কাজ করছেন।

নুরউননেছা শাহীন জানান, একটি তালগাছ থেকে সুফল পেতে কমপক্ষে ২০ বছর সময় লাগে। ২০ বছর বয়সী একটি তালগাছ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যায়। এছাড়াও বছরে ৩/৪ হাজার টাকার তাল বিক্রি করা যায়। তালগাছের পাতা দিয়ে হাত পাখা, মাদুর, খেলনা ছাড়াও গৃহস্থালি কাজে ব্যবহার করা যায়। তিনি তালগাছ লাগানোর সময় অনেকে বলেছেন- তালগাছ লাগিয়ে লাভ কী। তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে ও বজ্রপাত নিরোধক হিসাবে এ কাজটি করে যাচ্ছি। অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত লাভবান না হওয়ার কারণে তালগাছ দ্রুত বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে সকল ধরনের গাছ থাকা প্রয়োজন, ছোট বেলায় দেখেছি বাবুই পাখি একমাত্র তালগাছে বাসা বাঁধে, সে সময় একটা তালগাছে শত শত বাবুই পাখির বাসা দেখা যেতো। অস্বাভাবিক হারে তালগাছ কমে যাওয়ায় এমন দৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে বৃক্ষ রোপণের বিকল্প নেই।

তিনি ২০২১ সালে তালের বীজ সংগ্রহ করে নিজ উদ্যোগে নিজ হাতে চারা করে সে চারা ২০২১ সালে দেওয়ানগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এলজিডি রাস্তায় রোপণ করে তালগাছ প্রেমিক নামে পরিচিত হয়েছেন নুরউননেছা শাহীন।