বিশ্বকাপে বাটলারের প্রথম সেঞ্চুরিতে সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ এবারের আসরে প্রথম সেঞ্চুরিয়ান জশ বাটলারের দুর্দান্ত ইনিংসের সুবাদে প্রথম দল হিসেবে চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলো ইংল্যান্ড। ১ নভেম্বর সুপার টুয়েলভে গ্রুপ-১এর ম্যাচে ইংল্যান্ড ২৬ রানে হারিয়েছে শ্রীলংকাকে। এবারের বিশ্বকাপে এবং সংক্ষিপ্ত ভার্সনে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে ১০১ রানে অপরাজিত থাকেন বাটলার।

টানা চার জয়ে ৪ খেলায় ৮ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ-১এ টেবিলের শীর্ষে থেকে সেমির টিকিট পায় ইংল্যান্ড। আর ৪ খেলা শেষে ১ জয় ও ২ হারে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থস্থানে থাকায় সেমিফাইনালের আশা একরকম শেষই হয়ে গেল শ্রীলংকার। ৩ ম্যাচ শেষে ৪ করে পয়েন্ট নিয়ে সেমির দৌঁড়ে আছে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

আজ শারজাহতে টস হেরে প্রথমে বোলিং করতে নামে শ্রীলংকা। বল হাতে নিয়ে শুরুতেই ইংল্যান্ডকে চাপে ফেলেন শ্রীলংকার দুই ওপেনিং বোলার দুসমন্থ চামিরা ও আগের ম্যাচের হ্যাট্টিকম্যান হাসারঙ্গা ডি সিলভা। ৫ দশমিক ২ ওভারের মধ্যে ৩৫ রানে ইংলিশদের টপ-অর্ডারের তিন ব্যাটারকে ফিরিয়ে দেন চামিরা ও ডি সিলভা।

ওপেনার জেসন রয়কে ৯ ও মিডল-অর্ডার ব্যাটার জনি বেয়ারস্টোকে খালি হাতে ফেরান ডি সিলভা। আর তিন নম্বরে নামা ডেভিড মালানকে ৬ রানে থামান চামিরা।

এরপর অধিনায়ক ইয়োইন মরগানকে নিয়ে দলকে বিপদমুক্ত করেন বাটলার। শুরুতেই সাবধানী ছিলেন বাটলার ও মরগান উভয়েই । তাই ১০ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪৭ রান।

৪৫ বল মোকাবেলায় ১৪তম ওভারের তৃতীয় বলে হাফ-সেঞ্চুরি পুর্ন করেন বাটলার। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ধীর গতির হাফ-সেঞ্চুরি করলেন বাটলার।

এরপর শ্রীলংকার বোলারদের উপর ঝড় বইয়ে দিয়েছেন বাটলার। ২২ বলে পরের হাফ-সেঞ্চুরি করে টি-টোয়েন্টিতে ৮৬ ম্যাচের ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ নেন বাটলার।

১৯তম ওভার শেষে ৬১ বলে বাটলারের রান ছিলো ৮৭। ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে চার, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে ২ রান করে নেন তিনি। চতুর্থ-পঞ্চম বল ডট হয়। সেঞ্চুরি পুরন করতে করতে শেষ বলে ৫ রান দরকার ছিলো বাটলারের। চামিরার করা ওভারের শেষ বলটি ফুলটস পেয়ে স্কয়ার লেগের উপর দিয়ে ছক্কা মেরে এবারের বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরি হাকান বাটলার।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটি নবম সেঞ্চুরি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের হয়ে সেঞ্চুরি পাওয়া দ্বিতীয় ব্যাটার তিনি। এর আগে ২০১৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম ইংলিশম্যান হিসেবে সেঞ্চুরি করেছিলেন অ্যালেক্স হেলস। আর ইংল্যান্ডের হয়ে তিন সংস্করণেই সেঞ্চুরি পাওয়া একমাত্র ব্যাটসম্যান বাটলার।

শেষ পর্যন্ত ৬৭ বলে ৬টি করে চার-ছক্কায় অপরাজিত ১০১ রান করেন বাটলার। চতুর্থ উইকেটে মরগানের সাথে ৭৮ বলে ১১২ রান যোগ করে ইংল্যান্ডকে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৬৩ রানের শক্ত পুঁজি এনে দেন বাটলার। ৩৬ বলে ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪০ রান করেন মরগান। শ্রীলংকার হাসারাঙ্গা ডি সিলভা ২১ রানে ৩ উইকেট নেন।

জয়ের জন্য ১৬৪ রানের জবাবে ৭৬ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারায় শ্রীলংকা। ষষ্ঠ উইকেটে ৩৬ বলে ৫৩ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক দাসুন শানাকা ও হাসারাঙ্গা । এতে লড়াইয়ে ফেরার পথ পেয়েছিলো শ্রীলংকা। কিন্তু শ্রীলংকান কোন ব্যাটার বাটলারের মত ইনিংস খেলতে না পারায় তাই ১৯ ওভারে ১৩৭ রানে অলআউট হয় শ্রীলংকা।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন হাসারাঙ্গা। ২৬ রান করে করেন ভানুকা রাজাপাকসে ও শানাকা। ইংল্যান্ডের মঈন আলি-আদিল রশিদ ও ক্রিস জর্ডান ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন বাটলার।

গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে আগামী ৬ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড। আর নিজেদের শেষ ম্যাচে আগামী ৪ নভেম্বর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে লড়বে শ্রীলংকা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ইংল্যান্ড : ১৬৩/৪, ২০ ওভার (বাটলার ১০১*, মরগান ৪০, হাসারাঙ্গা ৩/২১)।
শ্রীলংকা : ১৩৭/১০, ১৯ ওভার (ডি সিলভা ৩৪, রাজাপাকসে ২৬, মঈন ২/১৫)।
ফল : ইংল্যান্ড ২৬ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : জশ বাটলার (ইংল্যান্ড)।