নরুন্দিতে কলেজছাত্রী ধর্ষণের শিকার, প্রতারক প্রেমিক অটোচালক গ্রেপ্তার

জামালপুরে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার অটোচালক ফয়সাল। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের নরুন্দিতে কলেজছাত্রীকে রাতভর ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি প্রতারক প্রেমিক অটোচালক মো. ফয়সালকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১৫ মে রাতে জামালপুর সদরের নরুন্দি ইউনিয়নের মহিশুড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে ফয়সালকে ১৬ মে রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১৭ মে সকালে ফয়সালসহ পাঁচজন অটোচালককে আসামি করে সদর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ওই কলেজছাত্রীর (২৪) বাড়ি জামালপুর সদর উপজেলার নরুন্দি ইউনিয়নের কোচনধরা গ্রামে। একই ইউনিয়নের চন্দ্রবাড়ী গ্রামের মো. দেলোয়ার হোসেনের ছেলে অটোচালক ফয়সাল প্রেমের সম্পর্কের জেরে ওই কলেজছাত্রীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছিল। বাড়ির কিছু জিনিস কেনার জন্য কলেজছাত্রী ১৫ মে সকালে নরুন্দি বাজারে যান। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাজারের বটতলা মোড়ে তাকে একা পেয়ে ফয়সালের বন্ধু কয়েকজন অটোচালক তাকে বলে ফয়সাল আজকেই তাকে বিয়ে করবে। ফয়সাল বর্তমানে নরুন্দি ইউনিয়নের মহিশুড়া গ্রামে তার খালার বাড়িতে অবস্থান করছে। তাকে সেখানে নিয়ে যেতে বলেছে ফয়সাল।

এ সময় কলেজছাত্রী তাদের কথায় রাজি হয়। কিন্তু ফয়সালের বন্ধুরা তাকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার বদলে এখানে সেখানে ঘুরে সময় কাটায়। সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে ফয়সালের বন্ধুরা তাকে নিয়ে মহিশুড়া গ্রামে ফয়সালের খালারবাড়িতে না গিয়ে একই গ্রামে আরেক বন্ধু আলমগীরের আত্মীয় আশরাফ আলীর বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেও ফয়সাল সেখানে যায়নি। বন্ধুরা জানায় আসতেছে।

রাত আনুমানিক ৮টার দিকে বন্ধুরা তাকে ওই আশরাফ আলীর বাড়ির পাশেই মৎস্য প্রকল্পের ভেতরে টিনের একচালা ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই উৎপেতে থাকা ফয়সাল ওই ছাত্রীকে আটকে রেখে রাতভর ধর্ষণ করে। এতে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরদিন ১৬ মে সকালে ফয়সালের সহযোগীরা তাকে অটোতে করে ভারুয়াখালি বাজারে একটি হোটেলের সামনে নামিয়ে দিয়ে কেটে পড়ে। পরিবারের স্বজনরা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়।

পরিবারের স্বজনদের সহযোগিতায় ওই ছাত্রী ১৬ মে রাতে স্থানীয় নরুন্দি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে গিয়ে অভিযোগ করেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে নরুন্দি তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে ওই ধর্ষণকারী ফয়সালকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ব্যাপারে ওই ছাত্রী নিজে বাদী হয়ে ফয়সাল ও তার চারজন সহযোগীকে আসামি করে ১৭ মে সকালে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার অপর আসামিরা হলেন অটোচালক আলমগীর হোসেন, মো. অপু, মো. শাহীন ও খোকা।

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল ইসলাম খান বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, কলেজছাত্রীকে অপহরণ, ধর্ষণ ও এসব অপরাধে সহযোগিতার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সদর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার পাঁচজন আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার প্রধান আসামি ফয়সালকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। কলেজছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেন ওসি।