বকশীগঞ্জে উজির আলী আকন্দ পরিবারের উদ্যোগে আইনজীবী সোহেল রানা আকন্দের মাস্ক বিতরণ

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হাতে মাস্ক তুলে দেওয়া হয়। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় দেশজুড়ে সরকার নির্দেশিত লকডাউন শেষে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ ফর্মুলা চলছে। সীমিত পরিসরে দোকানপাট, বাজার ও অফিস খোলা থাকায় বাইরে বের হচ্ছেন বকশীগঞ্জ উপজেলাবাসী।

এ অবস্থায় উপজেলা শহরজুড়ে জনসাধারণের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতসহ স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কাজ করছে ‘মরহুম উজির আলী আকন্দ পরিবার’ নামে একটি সামাজিক সংগঠন।

এরই প্রেক্ষিতে ২৬ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয়, থানা, পৌরসভা, হাসপাতাল, সাংবাদিক সংগঠন, বিভিন্ন মসজিদসহ শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে মরহুম উজির আলী আকন্দ পরিবারের পক্ষে আইনজীবী মো. সোহেল রানা আকন্দের ব্যক্তিগত অর্থায়নে সার্জিক্যাল মাস্ক বিতরণ করা হয়।

বকশীগঞ্জ খান বাড়ি জামে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি হযরত আলী আকন্দ বলেন, ‘মসজিদে তারাবি নামাজের সময় অনেক জনসমাগম হয়। সরকার নির্দেশিত মুসল্লিদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে এর আগে কেউ এভাবে মাস্ক বিতরণ করেনি। কাজটি শুরু করার জন্য আইনজীবী সোহেল রানা আকন্দের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’

আইনজীবী মো. সোহেল রানা আকন্দ জানান, ‘করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সবাইকে সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত। তাই আমার এলাকার জনসাধারণের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমার এ ক্ষুদ্র প্রয়াস।’ ভবিষ্যতও এ ধরনের জনকল্যাণমূলক কাজ অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন করেন সংসদীয় আসন জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ) ফেসবুক গ্রুপের এডমিন রুদ্র মুসাদ্দেক, নোমান রাশেদ, শিহাব, হৃদয় এবং ফারদিন। এছাড়াও কামরুজ্জামান, আদনান, বাহার, সোহেব, আবীরসহ আকন্দ পরিবারের অনেকেই সহযোগিতা করেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও গ্রুপের এডমিন রুদ্র মুসাদ্দেক জানান, সংসদীয় আসন জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ) ফেসবুক গ্রুপটি ওই এলাকার জনসাধারণের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছে। এলাকার সকল সমস্যার সমাধান ও সম্ভাবনা নিয়ে গ্রুপটি কাজ করছে। কিন্তু গ্রুপটি পরিচালনা করতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।এজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

এ ব্যাপারে বকশীগঞ্জ উপজেলার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সরকার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আইনজীবী সোহেল রানা আকন্দ বিভিন্ন সময়ে এলাকাবাসীকে সহযোগিতা করে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের এ মাস্ক বিতরণ কর্মসূচী। এ কাজে আমি যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করেছি এবং ভবিষ্যতেও করবো।’

বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম সম্রাট বলেন, ‘সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী মাস্ক ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এ কাজে সহযোগিতা করার জন্য মরহুম উজির আলী আকন্দ পরিবারকে ধন্যবাদ জানাই।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রতাপ নন্দী বলেন, ‘মরহুম উজির আলী আকন্দ পরিবারের আগেও কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সামাজিক প্রতিরোধ শুরু করে প্রশংসিত হয়েছে। আবারও সরকারের ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ ফর্মুলা বাস্তবায়নে মাস্ক বিতরণের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।’

বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনমুন জাহান লিজা বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর নতুন স্ট্রেইন মোকাবেলায় মাস্ক ব্যাবহারের বিকল্প নেই। তাই আমাদের সবার মাস্ক ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। রমজানে মসজিদগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। মরহুম উজির আলী আকন্দ পরিবারের এ ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।’ এসময় তিনি প্রান্তিক পর্যায়ে ব্যাপকহারে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য কাজ করতে উপস্থিত সকলের প্রতি আহ্বান জানান।