দেওয়ানগঞ্জে গরম বাতাসে প্রচুর ধান ক্ষতিগ্রস্ত, হতাশ কৃষক

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চুকাইবাড়ী ইউনিয়নের চুকালী এলাকায় কৃষক নূর মোহাম্মদ ও জাহের আলীর ধান ক্ষেত। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

বিল্লাল হোসেন মন্ডল, দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় গরম বাতাসে প্রচুর ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন কৃষক। ৪ এপ্রির সন্ধ্যায় উপজেলার ওপর দিয়ে গরম বাতাসের তান্ডব বয়ে যাওয়ায় উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ধান সাদা হয়ে গেছে। গরম বাতাসে ভেঙ্গে গেছে কৃষকের স্বপ্ন। তবে কৃষকদের হিসাব মতে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হলেও কৃষি বিভাগ বলছেন ৪০ হেক্টর। ৭ এপ্রিল সকালে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বেশির ভাগ ধানের শীর্ষ সব সাদা হয়েছে।

চুকাইবাড়ী ইউনিয়নের তালতলা গ্রামের কৃষক জাহের আলী বলেন, আমি ধার দেনা করে ২ বিঘা জমিতে বি-২৮ ধানের চাষ করেছি এতে খরচ হয়েছে ২৪ হাজার টাকা, ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় সারাদেশে ঝড়ো হাওয়ার সময় দেওয়ানগঞ্জে শুধু ধুলা আর গরম বাতাস হয়েছে। পরদিন ৫ এপ্রিল সকালে জমিতে গিয়ে দেখি ধানের সবুজ শীষ সাদা রঙে পরিণত হয়েছে। ফসল ক্ষতি হওয়াতে ছেলে মেয়ে নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। গতবছর বন্যায় ফসলের ক্ষয়-ক্ষতি পুশিয়ে নিতে না নিতেই এ বছর বন্যায় না ডুবলেও আশ্চর্যজনকভাবে ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।

ডালবাড়ী এলাকার কৃষক নূর মোহাম্মদ বলেন, সুদের ওপর টাকা নিয়ে ২ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছিলাম। গরম বাতাসে ধান সাদা হয়ে ছিটা হয়েছে, লাভের টাকা দেওয়া ও ছেলে মেয়ের খরচ কি করে দিমু, এব্যাপারে কৃষি অফিস থেকেও কোন খোঁজখবর নেয় নাই আমাদের।

উপজেলার পাররামরামপুর ইউনিয়নের বাশতলি গ্রামের আইনাল হক বলেন, যেগুলোতে দুধ এসেছিল, সেগুলোই সাদা হয়ে গেছে। নিচের অর্থাৎ শেষ দিকের লাগানো জমিগুলোই এমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোনো ঝড় না কিছু না একটা প্রচন্ড গরম অনুভূত হয়। আর এরপরই সকালে আমরা মাঠে এসে এমনটা দেখতে পাই।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় ৯ হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে ৪০ হেক্টর জমির ধান আক্রান্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪ হেক্টর জমি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা ইয়াসমিন জানান, উপজেলায় ৪০ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ পাওয়া গেছে ৪ হেক্টর জমির ধান। ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় উপজেলায় গরম বাতাসের তান্ডব হয়েছে। এ তান্ডবেই জমিতে ধানের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে নিয়মিত পানি ধরে রাখতে পারলে ক্ষতি কম হবে বলে তিনি জানান।

আরও পড়তে পারেন : ‘শেরপুরে আলোক ফাঁদ-এ আশাবাদী লাখো কৃষক’