জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম
জামালপুরে ৬ জুলাই নতুন আরও সাতজন শনাক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬৪৮ জন। এছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় হোম আইসোলেশনে থাকা একজন করোনার রোগীর সংস্পর্শে আসা-যাওয়ার কারণে একই পরিবারে একাধিক সদস্য করোনায় আক্রান্ত হওয়ার মাত্রাও দিনদিন বাড়ছে। জামালপুরের সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, ৬ জুলাই জামালপুরের শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের পিসিআর ল্যাবে ৯৪টি নমুনা পরীক্ষায় সাতজন করোনার রোগী শনাক্ত হয়েছে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে জামালপুর সদরের তুলসীপুর, পৌরসভার নয়াপাড়া পাঁচ রাস্তা মোড়, ইকবালপুর, কাছারিপাড়া ও পাথালিয়া এলাকায় এবং সরিষাবাড়ী উপজেলার কামরাবাদ এলাকায় রয়েছেন একজন করে।
সূত্রটি আরও জানায়, অন্যান্য দিনের মতো ৬ জুলাইয়ের প্রতিবেদনে জামালপুর সদরে আগে আক্রান্ত পরিবারের সদস্যের সংস্পর্শে আসা-যাওয়ার কারণে একই পরিবারের অন্য সদস্যদের মাঝেও করোনা সংক্রমণের তথ্য পাওয়া গেছে। একই পরিবারে সংক্রমণের মধ্যে জামালপুর শহরের নয়াপাড়ায় একটি পরিবারের বাবা-মায়ের পর ৬ জুলাই ছয় বছর বয়সের এক মেয়েশিশুর করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। ৩ জুলাই করোনায় আক্রান্ত শহরের ইকবালপুর এলাকায় নিজ বাসায় আইসোলেশনে থাকা ৫৫ বছর বয়সের একজন নারীকে শঙ্কটাপন্ন অবস্থায় ৬ জুলাই ময়মনসিংহের এসকে করোনা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তার সংস্পর্শে যাওয়া ১৩ বছর বয়সের নাতনির করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে ৬ জুলাই।
এদিকে এর আগে জামালপুরের ইসলামপুর পৌরসভার কাছারি এলাকায় হোম আইসোলেশনে থাকা এক পুলিশ সদস্যের পর তার পরিবারের আরও চারজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। জামালপুর শহরের মৃধাপাড়ায় একই পরিবারের তিনজন নারী করোনায় আক্রান্ত হয়ে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। সম্ভাব্য রোগীদের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হওয়ার চাইতে আগে আক্রান্ত রোগীদের বিশেষ করে কম উপসর্গের রোগীদের হোম আইসোলেশনে স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে না মানার কারণেই তাদের দ্বারাই করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। এ কারণেই মূলত গত জুন মাসে এবং ৬ জুলাই পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে জামালপুর পৌরসভা এলাকাসহ জামালপুর সদর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি করোনার রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৫০ জন। ১১৫ শনাক্ত হওয়া নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে জেলার ইসলামপুর উপজেলা।
একই পরিবারে একাধিক ব্যক্তির করোনা সংক্রমণ প্রসঙ্গে জামালপুরের সিভিল সার্জন চিকিৎসক প্রণয় কান্তি দাস এ প্রতিবেদককে বলেন, একজন করোনায় আক্রান্ত হলে তার সংস্পর্শে আসা-যাওয়া ব্যক্তিরাও আক্রান্ত হতেই পারে। হোম আইসোলেশনের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি হচ্ছে। একটি পরিবারের প্রথম আক্রান্ত ব্যক্তি যদি স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব সঠিকভাবে মেনে এবং ডাক্তারদের পরামর্শ মেনে বাসাবাড়িতে আইসোলেশনে থাকেন তাহলে পরিবারের অন্যদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। যাদেরকে হোম আইসোলেশনে রাখা হয়, তারা বাসায় থাকা সমস্যা মনে করলে শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি হতে পারেন। এরকম কয়েকজন রোগীকে ইতিমধ্যে হোম আইসোলেশন থেকে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে স্থানান্তরও করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ৬ জুলাই নতুন শনাক্ত সাতজনসহ এ নিয়ে জেলায় মোট করোনায় আক্রান্ত হলেন ৬৪৮ জন। তাদের মধ্যে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়েছেন ৪৩৮ জন এবং মারা গেছেন নয়জন। বর্তমানে ২০১ জন করোনার রোগী প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।