ইসলামপুরে মেয়ের পর স্ত্রীর করোনা পজিটিভ, মেয়রের নেগেটিভ, জেলায় নতুন আক্রান্ত ১২

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের ইসলামপুর পৌরসভার মেয়রের ছোট মেয়ের সংস্পর্শে আসায় এবার মেয়রের স্ত্রীর করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। একই সাথে নমুনা পরীক্ষায় বড় মেয়ে ও মেয়রের করোনা নেগেটিভ এসেছে। ওই মেয়রের স্ত্রীসহ ৬ জুন জেলায় আরও ১২ জন করোনার রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন মৎস্য কর্মকর্তা, পুলিশের দু’জন এসআই, একজন নারী পোশাককর্মী, ক্যান্সারে আক্রান্ত এক নারী ও একজন নারী পরিচ্ছন্নকর্মী রয়েছেন। জেলার সিভিল কার্যালয় সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে ৬ জুন জামালপুরের ৯৯টি নমুনা পরীক্ষায় জেলার চার উপজেলায় ১২ জনের করোনা পজিটিভ আসে। তাদের মধ্যে ইসলামপুরে পাঁচজন, মাদারগঞ্জে তিনজন, মেলান্দহে দু’জন ও সরিষাবাড়ী উপজেলায় দু’জন রয়েছেন।

সূত্রটি জানায়, ইসলামপুরে করোনায় আক্রান্ত পাঁচজনের মধ্যে ইসলামপুর পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের সেখের স্ত্রী (৪৮) রয়েছেন। গত ৩০ মে মেয়রের ছোট মেয়ে শহরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রীর (২৩) করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। ধর্মকুড়ার নিজ বাসায় আইসোলেশনে রয়েছে মেয়েটি। এরপর মেয়র, তার স্ত্রী ও বড় মেয়ের নমুনা দিলে মেয়রের স্ত্রীর করোনা পজিটিভ এবং মেয়র ও বড়মেয়ের করোনা নেগেটিভ আসে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মেয়র আব্দুল কাদের সেখ এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘ছোট মেয়ে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর স্ত্রী ও বড়মেয়ের সাথে আমিও নমুনা দিয়েছিলাম। স্ত্রীর পজিটিভ আসে। বড়মেয়ে আর আমার করোনা নেগেটিভ আসে। ছোট মেয়ের সেবাশুশ্রুষা করার কারণেই হয়তো আমার স্ত্রীও করোনায় আক্রান্ত হলেন। তবে তার তেমন উপসর্গ নেই।’ ছোটমেয়েটি সুস্থ হওয়ার পথে বলেও জানান মেয়র।

এছাড়া ইসলামপুর পৌরসভার কিংজাল্লা গ্রামের একজন পুরুষ আইনজীবী (৩৮), সিরাজাবাদ গ্রামের একটি টোবাকো কোম্পানির গুদামরক্ষক (২৪), চিনাডুলী ইউনিয়নের ফয়লামারী গ্রামে গাজীপুর থেকে আসা নারী পোশাককর্মী (৩১) এবং পৌরসভার ঋষিপাড়ার এক নারী পরিচ্ছন্নকর্মীর (২৮) করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে।

নতুন আক্রান্তদের মধ্যে পুলিশে সদ্য নিয়োগ পাওয়া দু’জন এসআই রয়েছেন। দু’জনের মধ্যে সরিষাবাড়ী উপজেলায় বাড়ি একজনের বয়স ২৫ বছর ও মেলান্দহ উপজেলায় বাড়ি অপরজনের বয়স ২৪ বছর। এই দু’জনসহ ২৯ জনের একটি ব্যাচ বর্তমানে জামালপুর পুলিশ লাইন্সে অবস্থান করছেন। আসছে ১৩ জুন সারদায় পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণে যাওয়ার কথা রয়েছে তাদের। তাদের সবার নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠালে এই দু’জনের করোনা পজিটিভ আসে।

একই দিনে করোনা শনাক্ত হওয়া অন্য পাঁচজনের মধ্যে মাদারগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (৩৫), একই উপজেলার উত্তর জোরখালি গ্রামের একজন বৃদ্ধা (৬৮) ও গুনারিতলা গ্রামের এক যুবক (২৪), মেলান্দহের কুলিয়ায় ক্যান্সারে আক্রান্ত এক নারী (৪০), সরিষাবাড়ী উপজেলার ভাটারা ইউনিয়নের ভেবলা গ্রামে ৩ জুন করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া একজন পোশাককর্মীর ১৫ বছর বয়সের নিকটাত্মীয় এক ছেলে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।

জেলার সিভিল সার্জন চিকিৎসক প্রণয় কান্তি দাস এ প্রতিবেদককে বলেন, ৬ জুন নতুন করে শনাক্ত ১২ জনের শরীরে করোনার উপসর্গের তীব্রতা বিবেচনায় আলাদা করে তাদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ নিয়ে জেলার সাত উপজেলায় মোট ৩৩৪ জন করোনার রোগী শনাক্ত হলো। তাদের মধ্যে দুই নারীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে এবং প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম আইসোলেশনে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়েছেন ১৪৫ জন।