যমুনা সার কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে পুকুরে লক্ষাধিক টাকার মাছের ক্ষতি

যমুনা সার কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য পানিতে মিশে পুকুরের মাছ মরে ভেসে উঠেছে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

যমুনা সার কারখানার সার পঁচে ও বিষাক্ত বর্জ্য পানিতে মিশে এক মাছ চাষীর পুকুরে দশ লক্ষাধিক টাকার মাছ মরে ভেসে উঠেছে। জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলঘিা ইউনিয়নের কান্দারপাড়া গ্রামে মাছ চাষী ও পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের পুকুরে এ ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন।

ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, কান্দারপাড়া গ্রামে ২ বিঘা জমির পুকুরে কয়েক ভাই মিলে ২ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে বিভিন্ন প্রজাতের মাছ চাষ শুরু করি। মাছগুলো বড় হয়ে বর্তমান এর বাজারমূল্য ছিল দশ লক্ষ টাকা। ২১ ও ২২ মে টানা দুইদিনের বৃষ্টিতে যমুনা সার কারখানার সার পঁচে ও বিষাক্ত বর্জ্য পানিতে মিশে পুকুরে ঢুকে সমস্ত মাছ মরে যায়। পুকুরে রুই, কাতলা, তেলাপিয়া, সিলভার ও কার্প জাতীয় মাছসহ প্রায় ১৫ প্রজাতির মাছ ছিল। সব মাছ মরে ভেঁসে উঠায় বিনিয়োগসহ সব চলে গেছে।

তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, যমুনা সার কারখানার সার যত্রতত্রভাবে ফেলে রাখায় সেগুলো পঁচে ও কারখানার অন্যান্য বিষাক্ত বর্জ্য পুকুরের পানিতে মিশে সব মাছ মরে গেছে। গতবছরও এভাবে মাছ মরে ৮ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। কারখানার কর্তৃপক্ষের কাছে সহায়তা চেয়ে আবেদন করের কোন লাভ হয়নি। এবারও যমুনা সার কারখানার কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি ক্ষতিপূরনের আবেদন করবেন।

জানা যায়, দৈনিক এক হাজার ৭০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া উতপাদনে সক্ষম যমুনা সার কারখানা ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য ও অ্যামোনিয়া গ্যাস সরাসরি বাতাস, মাটি ও পানিতে ছাড়া হয়। এতে কারখানার পাশ্ববর্তী বিল ও পুকুরগুলোতে মাছ প্রায়ই গণহারে মারা য়ায়। এছাড়া জমির ফসল ও গাছপালা ক্ষয়ক্ষতিসহ অন্তত দশটি গ্রামের মানুষের নিয়মিত স্বাস্থ্য ঝুকিতে ভুগছে।

এদিকে কারখানার বাফার গুদামের হাজার হাজার মেট্রিক টন সার নির্ধারিত গুদামে সংরক্ষণ না করে খোলা আকাশের নিচে জমা করে ত্রীপল দিয়ে ঢেকে ফেলে রাখা হয়েছে। সেগুলো বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে এবং তা বিভিন্ন বিলে ও পুকুরে পানিতে মিশে সব মাছ মরে ভেসে উঠছে। এতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কর্তৃপক্ষ কোন প্রতিকার করছে না।

এ ব্যাপারে যমুনা সার কারখানার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মঈনুল হক এ প্রতিবেদককে বলেন, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা আবেদন করলে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।