ধানুয়া কামালপুর স্থল বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তার ১২ বছরের জেল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

দুর্নীতি দমন ব্যুরোর দায়ের করা একটি মামলার রায়ে শুল্ক ও রাজস্ব করের টাকা আত্মসাতের দায়ে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া কামালপুর স্থল বন্দরের একজন রাজস্ব কর্মকর্তার ১২ বছরের এবং অপর আসামি আমদানিকারক মো. ইমারুল হককে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ৩ মার্চ দুপুরে জামালপুরের স্পেশাল জজ মোহাম্মদ জহিরুল কবির তাঁর আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।

জামালপুরের স্পেশাল জজ মোহাম্মদ জহিরুল কবির রায়ে মামলাটির প্রধান আসামি আমদানিকারক মো. ইমারুল হককে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ লাখ ১১ হাজার ২২৮ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। দ্বিতীয় আসামি স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলামকে পৃথক দুটি ধারায় ১২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ লাখ ১১ হাজার ২২৮ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। রায় ঘোষণার পর আসামি মো. ইমারুল হককে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি রাজস্ব কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম মামলার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন। তিনি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার মুখী গ্রামের মৃত আসমত আলীর ছেলে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০০৩ সালে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া কামালপুর স্থল বন্দর হয়ে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স শেরপুর ট্রেডার্সের স্বত্বাধীকারী মো. ইমারুল হক ভারত থেকে ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন কয়লা ও ৪০০ মেট্রিক টন পাথর আমদানি করেন। ওই প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা শেরপুর জেলা সদরের নওহাটা ব্যবহার করলেও মো. ইমারুল হকের বাড়ি দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর থানার চন্ডিপুর গ্রামে। তার বাবার নাম মো. আফাজ উদ্দিন। ওই সময় স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম আমদানিকারক মো. ইমারুল হকের সাথে যোগসাজস করে হিসাব সংরক্ষণ না করে আমদানি শুল্ক ও রাজস্ব করের ১০ লাখ ২২ হাজার ৪৫৬ টাকা আত্মসাত করেন।

এ ব্যাপারে তৎকালীন জামালপুরের জেলা দুর্নীতি দমন ব্যুরোর সহকারী পরিদর্শক মেনহাজ আলী খান বাদী হয়ে ২০০৩ সালের ৬ আগস্ট আমদানিকারক মো. ইমরারুল হক ও স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বকশীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তাদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী কর্তৃক অপরাধ সংঘটন, বিশ্বাসভঙ্গ, সরকারি আলামত গোপন ও শুল্ক ফাঁকির সহযোগিতার মাধ্যমে সরকারি শুল্ক ও রাজস্ব করের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। দীর্ঘ সাত বছর পর তদন্ত শেষে ২০১০ সালের ১৫ জুন দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল হয়। বিচার প্রক্রিয়া চলাকালে ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে জামালপুরের বিশেষ জজ মোহাম্মদ জহিরুল কবির ৩ মার্চ দুপুরে মামলাটির রায় ঘোষণা করেন।

মামলাটির রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন পিপি মো. লুৎফর রহমান রতন এবং আসামি পক্ষ সমর্থন করেন আইনজীবী মো. ইকবাল।