সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবীরের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবীরের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর দোয়ায় অংশ নেন জামালপুর প্রেসক্লাবের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকসহ অন্যান্যরা। ছবি : সাইমুম সাব্বির শোভন

নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠিডটকম

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক বিশিষ্ট সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবীরের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে ১৬ জানুয়ারি দুপুরে মরহুমের জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার রেখিরপাড়াস্থ নিজ গ্রামের বাড়িতে কোরআনখানী দোয়া মাহফিল ও জামালপুর প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তার কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

এসময় জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা, জামালপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন, জামালপুর প্রেসক্লাবের সহসভাপতি দুলাল হোসাইন ও দি ইন্ডিপেনডেন্ট পত্রিকার সাংবাদিক মুখলেছুর রহমান লিখন, বাসস এর সাংবাদিক বজলুর রহমান, প্রথম আলোর সাংবাদিক আব্দুল আজিজসহ প্রেসক্লাবের কর্মকর্তা ও স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

১৯৪৭ সালের ২৪ জানুয়ারি জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন আমানুল্লাহ কবীর। দীর্ঘ চাকরি জীবনে বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষার সংবাদপত্রেই তিনি কাজ করেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৮ সালে মাস্টার্স করা আমানুল্লাহ কবীর এক সময় ছিলেন ইংরেজি দৈনিক নিউ নেশনের বার্তাকক্ষের প্রধান। নিউ নেশন তখন দেশের অন্যতম প্রধান সংবাদপত্র।

১৯৯১ সালে এস এম আলীর সম্পাদনায় ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার প্রকাশিত হলে তার প্রথম বার্তা সম্পাদক ছিলেন আমানুল্লাহ কবীর। ওই বছরের শেষ দিকে নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে ইংরেজি দৈনিক টেলিগ্রাফে যোগ দেন তিনি। বেক্সিমকোর মালিকানায় দৈনিক ইনডিপেনডেন্টের প্রতিষ্ঠাকালীন নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন আমানুল্লাহ কবীর ।

পরে বিএনপি সরকারের সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ মাধ্যম বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পান তিনি।

আমানুল্লাহ কবীরের সম্পাদনায় ২০০৪ সালে প্রকাশিত হয় বাংলা পত্রিকা দৈনিক আমার দেশ। সে সময় পত্রিকাটির মালিক ছিলেন বিএনপির মোসাদ্দেক আলী ফালু।

প্রায় পাঁচ দশকের পেশা জীবনের শেষ সময়ে, শেষ পাঁচটি বছর আমানুল্লাহ কবীর ছিলেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে।

১৯৮০ আর ৯০ এর দশকে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোর নেতৃত্বের পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেছেন আমানুল্লাহ কবীর। সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো তখনও দলীয় মেরুকরণে বিভক্ত হয়নি।

অবিভক্ত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নে দুই মেয়াদে মহাসচিব এবং পরে সভাপতি ছিলেন তিনি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

‘প্রায় পাঁচ দশকের পেশা জীবনে সাংবাদিকদের রুটি-রুজির আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা এই নেতা এরশাদের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনেও পেশাজীবীদের মধ্যে নেতৃত্বের কাতারে ছিলেন।

২০১৯ সালের ১৬ জানুয়ারি রাত পৌনে একটায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে শারীরিক অসুস্থতার জন্য মারা যান সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবির।