জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন বিষয়ে অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

জামালপুরে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন বিষয়ে পরামর্শ ও পরিকল্পনা সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন বিষয়ে অবহিতকরণ কর্মশালা ও পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৬ জানুয়ারি জামালপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সভাকক্ষে স্থানীয় ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে এ অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সকালে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে একই বিষয়ের উপর পরামর্শ ও পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামালপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. বাছির উদ্দিন।

জামালপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের আয়োজনে এ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন সিভিল সার্জন চিকিৎসক গৌতম রায়। কর্মশালায় জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন বিষয়ে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিস্তারিত উপস্থাপন করেন উপ-সিভিল সার্জন চিকিৎসক এ কে এম শফিকুজ্জামান।

জামালপুর জেলা স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা আনিসুর রহমানের সঞ্চালনায় মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন সাংবাদিক এম এ জলিল, সাংবাদিক জাহাঙ্গীর সেলিম, সাংবাদিক এম সুলতান আলম, সাংবাদিক জাকির হোসেন ও সাংবাদিক ফজলে এলাহি মাকাম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই জানানো হয় আগামী ১১ জানুয়ারি শনিবার ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন কর্মসূচি জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।

অবহিতকরণ সভায় বিস্তারিত আলোচনায় জানানো হয়, ৬-১১ মাস বয়সী শিশুকে একটি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে ও ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এই ভিটামিন এ ক্যাপসুল সরবরাহ করেছে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ইউনিসেফ। প্রস্তুতকারক কোম্পানির দেশ হচ্ছে কানাডা ও বাংলাদেশের গ্লোব কোম্পানি।

আলোচনায় আরো জানা যায়, ভিটামিন এ অপুষ্টি জনিত অন্ধত্ব থেকে শিশুদের রক্ষা করে। শিশুরোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ডায়রিয়ার ব্যপ্তিকাল ও জটিলতা কমায় এবং শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়। বাংলাদেশে ভিটামিন এ অভাবজনিত সমস্যা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধিনে জাতীয় পুষ্টি সেবা, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান বছরে দুইবার জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন করে থাকে। ক্যাম্পেইনের কার্যক্রম হিসেবে বলা হয়েছে কর্মসূচির আওতায় ম্যাপ আপডেটকরণ, শিশু নিবন্ধনের জন্য বাড়ি পরিদর্শনের কার্যক্রম এবং ভিটামিন ‘এ’ বিষয়ে ১১টি বার্তা নিয়ে প্রচার কার্যক্রম চালানো হয়। এ বিষয়ে আরো প্রচারের মধ্যে রয়েছে এলাকায় এলাকায় মাইকিং করাসহ বিভিন্ন এলাকায় কেন্দ্র স্থাপন করে প্রচারণা চালানো।

জামালপুরে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন বিষয়ে অবহিতকরণ কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন চিকিৎসক গৌতম রায়। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

এবছর জামালপুরে এ কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ থেকে ১১ মাস শিশু ৩৫ হাজার ৫৪ জন (প্রতিবন্ধী-১৩৫ জন) ও ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশু ২ লাখ ৮৬ হাজার ২৫৩ জন (প্রতিবন্ধী-৫১৮ জন)। গত কর্মসূচিতে জামালপুরে লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৬ থেকে ১১ মাস শিশু ৩৪ হাজার ৪৬ জন ও ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশু ২ লাখ ৭৯ হাজার ৩৮০ জন। অর্জিত হয়েছে ৩৩ হাজার ৫৬৩ জন ও ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৭২ জন। এ কর্মসুচির অধিনে জামালপুরে স্থায়ী ও অতিরিক্ত কেন্দ্রের সংখ্যা- ১ হাজার ৬৯২টি।

সভাপতির বক্তব্যে সিভিল সার্জন চিকিৎসক গৌতম রায় ভিটামিন ‘এ’ ক্যাম্পেইন কর্মসূচির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, পৃথিবীতে প্রতিদিনই শিশুর মৃত্যু হচ্ছে আজও হবে এবং আগামী ১১ জানুয়ারিতেও কোন কোন শিশুর মৃত্যু হবে। শিশুর এই স্বাভাবিক মৃত্যুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খেয়ে শিশুর মৃত্যু হয়েছে এমন বিষয় না হওয়ারই কথা। যদি এরকম কোন জটিলতা সৃষ্টি হয় আপনারা আমার সাথে অবশ্যই যোগাযোগ করবেন। এটা আমার আপনাদের কাছে বিশেষ অনুরোধ।