বেলটিয়ায় ‘বীর বিক্রম শহীদ খুররম স্মৃতিস্তম্ভ’ উদ্বোধন

বীর বিক্রম শহীদ খুররম স্মৃতিস্তম্ভের ফলক উন্মোচনের পর পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন অতিথিবৃন্দ। ছবি : মাহমুদুল হাসান মুক্তা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুর জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মোতাসিম বিল্লাহ খুররম বীর বিক্রম স্মরণে জামালপুর শহরের বেলটিয়ায় ‘বীর বিক্রম শহীদ খুররম স্মৃতিস্তম্ভ’ স্থাপন করা হয়েছে। ১৭ ডিসেম্বর সকালে এই স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন করেন জামালপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মো. মোজাফফর হোসেন। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর মুক্তি সংগ্রাম যাদুঘর-জামালপুর, বেলটিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও শহীদ খুররমের পরিবারবর্গের উদ্যোগে এই স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হলো।

এ উপলক্ষে বেলটিয়া শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতেই শহীদ বীর বিক্রম শাহ মোতাসিম বিল্লাহ খুররমের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে স্মৃতিস্তম্ভের ফলক উন্মোচন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

বেলটিয়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো. আবুল মনসুর সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বীর বিক্রম শহীদ শাহ মোতাসিম বিল্লাহ খুররমের স্মৃতি চারণ করে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মো. মোজাফফর হোসেন। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ আতিকুর রহমান ছানা।

বীর বিক্রম শহীদ খুররম স্মৃতিস্তম্ভ। ছবি : মাহমুদুল হাসান মুক্তা

অনুষ্ঠানে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা খুররমের স্মৃতিচারণ করে আরও বক্তব্য রাখেন জামালপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল হোসেন, শহীদ খুররমের সহযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব:) মো. সাখাওয়াত হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক মুক্তিযোদ্ধা মো. আনোয়ার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা ফাররোখ আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা সুজায়েত আলী ফকির, মুক্তি সংগ্রাম জাদুঘর-জামালপুরের পরিচালক হিল্লোল সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আসাদুজ্জামান আকন্দ বাবু, শহীদ খুররমের জ্যেষ্ঠ সহোদর মো. আলমগীর হোসেন ও কণিষ্ঠ সহোদর শাহ মুসতাকিম বিল্লাহ শিবলী, বোন শাহী রেবেকা শারমিন, খালু মো. সামিউল ইসলাম প্রমুখ।

উল্লেখ্য, শহীদ বীর বিক্রম শাহ মোতাসিম বিল্লাহ খুররম ১৯৫১ সালের ২০ নভেম্বর তৎকালীন জামালপুর মহকুমার শ্রীবরদি থানার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের মলামারী গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত প্রগতিশীল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম শাহ মো. মোশাররফ হোসেন এবং মা বেগম ফজিলাতুন নেছা। খুররম ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তিনি সহযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে নিয়ে ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর ভোরে জামালপুর শহরকে পাকহানাদার মুক্ত করার শেষ লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়ে শহরের বেলটিয়ায় সম্মুখ যুদ্ধে তিনি শহীদ হন। তাঁর অসাধারণ দেশপ্রেম, অসীম সাহসিকতা ও মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে মরণোত্তর ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভূষিত করেন।