নালিতাবাড়ীতে মুঠোফোন চুরির অপবাদে আহত কিশোরের পাশে ইউএনও

নালিতাবাড়ীতে মুঠোফোন চুরির অপবাদে আহত কিশোরের পরিবারের কাছে নগদ পাঁচ হাজার টাকা চিকিৎসা সহায়তা হিসাবে তুলে দেন উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় মুঠোফোন চুরির অপবাদে কতিপয় দুর্বৃত্তের হাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার কিশোরকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান কিশোর মনিরুল ইসলাম ওরফে (১৪) পুতুরার বাড়িতে গিয়ে তার চিকিৎসা সহায়তা বাবদ নগদ পাঁচ হাজার টাকা অনুদান দেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ২২ সেপ্টেম্বর উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের পশ্চিম রাজনগর বন্ধুপাড়া গ্রামে আলী হোসেনের বাড়ি থেকে একটি মুঠোফোন চুরি হয়। এ ঘটনায় আলী হোসেনের পরিবার ওই কিশোরকে সন্দেহ করে। এক পর্যায়ে স্থানীয় যুবক ইসহাক ও রবিউলসহ অন্যরা ওই কিশোরকে রাস্তা থেকে ধরে এনে বিবস্ত্র করে বেধড়ক শারীরিক নির্যাতন চালায়। ফলে কিশোর পুতুরা গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে কিশোর বাড়ি চলে যায়। বর্তমানে সে বাড়িতেই বিশ্রাম নিচ্ছে।

এদিকে, ওই ঘটনার ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়লে প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নজরে আসে। এরই প্রেক্ষিতে ২৩ অক্টোবর শেরপুরের পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সেই সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জন্য স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।

অপরদিকে, জেলা প্রশাসক আনারকলি মাহবুব দরিদ্র অসহায় ওই কিশোরের খোঁজখবর নিতে ও চিকিৎসা সহায়তার জন্য আর্থিক সহযোগিতা করতে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) লুবনা শারমিনকে নির্দেশ দেন। এই দুই কর্মকর্তা ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে ওই কিশোরের রাজনগর বন্ধুপাড়া গ্রামের বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। এবং তার পরিবারের কাছে নগদ পাঁচ হাজার টাকা চিকিৎসা সহায়তা হিসাবে তুলে দেন।

এ সম্পর্কে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই কিশোরের ন্যায় বিচার প্রাপ্তির জন্য সব ধরনের সহযোগিতা দিবো।

প্রসঙ্গত, এ ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ২৪ সেপ্টেম্বর সকালে রাজনগর বন্ধুপাড়া গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে ইসহাক মিয়া (৩০) ও রবিউল মিয়া (২০) কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ওই দিন বিকেলেই গ্রেপ্তার করা দুই ভাইকে সাতদিনের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করে। আদালতের বিচারিক হাকিম মোহসিনা হোসেন তুশি আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর রিমান্ড শুনানির তারিখ ধার্য করে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।