জামালপুর ডিজিটলি ভূমি জরিপে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে বিশাল মানববন্ধন

জামালপুরে ডিজিটাল ভূমি জরিপের অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠিডটকম

২০১৪ সালে জামালপুর সদর উপজেলায় শুরু হওয়া ডিজিটাল ভূমি জরিপে ভয়ঙ্কর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জামালপুরে বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ২৮ আগস্ট সকালে জামালপুর পৌরসভার বগাবাইদ বাজারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার জালাল উদ্দিন। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম।

মানববন্ধনে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন এলাকার সর্বজন শ্রদ্ধেয় মুরব্বি আজিজুল হক, চিকিৎসক সোহরাব আলী, যুবসমাজের প্রতিনিধি শেখ রুকন প্রমুখ। শতাধিক ভুক্তভোগী মানববন্ধনে অংশ নেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন তার বক্তৃতায় বলেন, আমার কাছে জরিপকারী তিন লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। আমি তাদের স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছি দেশের মাটির জন্য যুদ্ধ করে বুকের তাজা রক্ত দিয়েছি সেই মাটির রেকর্ড করার জন্য আমি টাকা দিবো না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় সার্ভেয়ার কামরুজ্জামান মুঠোফোনে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালিজ করেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এসব অনিয়ম, দুর্নীতি সহ্য করতে পারছি না বলেই মানববন্ধন করছি। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ দিয়েও আমরা কোনো সাড়া পাচ্ছি না।

জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম উচ্চকন্ঠে বলেন, অবিলম্বে ভূমি জরিপসহ এসব কাজে অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এইসব দুর্নীতিবাজদের কারণে কষ্টার্জিত বাংলাদেশকে আর কলঙ্কিত হতে দিবো না। তিনি জামালপুরে ডিজিটাল ভূমি জরিপ দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি গঠনের প্রস্তাব রাখেন। এই প্রস্তাব সমস্বরে সমর্থন করা হয়।

চিকিৎসক সোহরাব হোসেন বলেন, এলাকার কিছু চিহ্নিত দালালদের সহায়তায় জরিপকারীরা আমাদের বোকা বানিয়ে দুর্নীতি করছে। এসব আমরা আর মানবো না। তিনি সার্ভে কাজে যুক্ত সংশ্লিষ্টদেরসহ দালালদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

এর আগে বগাবাইদসহ বিভিন্ন এলাকায় ভূমি জরিপের নামে ভয়াবহ দুর্নীতির কথা তুলে ধরে আঞ্চলিক জরিপ কর্মকর্তা আব্দুল আজিজের সাথে মুঠোফোনে কথা বলা হয়। এছাড়া জামালপুর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৬০ জন জরিপকারীর চুক্তিভিত্তিক চাকরির মেয়াদ চলতি বছরের ৩০ মে তারিখে শেষ হলেও তা অননুমোদিতভাবে পর্চা দেয়ার নাম করে রাতের অন্ধকারে ভূমি মালিকদের নিকট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী জরিপ কাজ শেষে সকাল ৯ থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মাঠে থেকে পর্চা দেয়ার নিয়ম থাকলে তারা অধ্যাবধি শেখেরভিটা এলাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে রাতের বেলায় পর্চা বিতরণ করছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তারা হলেন সার্ভেয়ার কামরুজ্জামান, সহায়ক জাহিদ আনোয়ার, বদর আমিন মনিরুজ্জাম।