ঘুষ ছাড়া দলিল পাস হয় না বকশীগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিস দুর্নীতির আখরায় পরিণত হয়েছে। সাব রেজিস্ট্রার মো. জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন অনেকেই। তার বিরুদ্ধে দলিল প্রতি এক হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ টাকা না দিলে দলিল পাস হয় না জমি ক্রেতা-বিক্রেতাদের।

২০১৭ সালের ১৬ আগস্ট বকশীগঞ্জ উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন মো. জাকির হোসেন। তিনি যোগদানের পর থেকেই সাব রেজিস্ট্রি অফিসকে দুর্নীতির আখরায় পরিণত করেছেন। জমি রেজিস্ট্রি করতে নির্দিষ্ট ফি ছাড়াও সাব রেজিস্ট্রারকে অতিরিক্ত এক হাজার ৫০০ টাকা করে দিতে হয়। যদি কোনো ক্রেতা বিক্রেতা দাবিকৃত টাকা না দিতে পারে তাহলে তার দলিল পাস হয় না। এনিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

গত জানুয়ারি মাসে দলিল নিবন্ধন করতে গেলে ঘুষ না দিতে না পারায় স্থানীয় এক মুক্তিযোদ্ধার সাথে বাকবিতন্ডা হয় এই সাব রেজিস্ট্রার জাকির হোসেনের। এ নিয়ে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের হস্তক্ষেপে তা শিথিল হয়।

এর পরও নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি সাব রেজিস্ট্রার জাকির হোসেন। একের পর এক ঘুষ বাণিজ্য করেই যাচ্ছেন তিনি। সম্প্রতি মো. আব্দুল্লাহ নামে এক সহকারী শিক্ষকের কাছেও দলিল নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত ফি ছাড়াও অতিরিক্ত ২২০০ টাকা ঘুষ নিয়েছেন সাব রেজিস্টার মো. জাকির হোসেন। ওই শিক্ষক ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে ১৮ আগস্ট রাতে সাব রেজিস্ট্র্রারের ঘুষ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। ওই শিক্ষক দুর্নীতিবাজ সাব রেজিস্ট্রার মো. জাকির হোসেনের বিচার দাবি করেছেন। একই সঙ্গে সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দুর্নীতি বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

শুধু দুর্নীতিই নয় এই সাব রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করার অভিযোগ রয়েছে। গত ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখে মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে না থাকায় ব্যাপক সমালোচনা হয়।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক অধিনায়ক মফিজ উদ্দিন জানান, তিনি হয়ত কোনো স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সন্তান হবেন। তা না হলে জাতির পিতার শাহাদাত বার্ষিকীতে অবশ্যই থাকতেন। পাশাপাশি তার দুর্নীতির তদন্ত করে শাস্তি দাবি করেন মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দিন।

দলিল প্রতি এক হাজার ৫০০ টাকা ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে সাব রেজিস্ট্রার মো. জাকির হোসেন বলেন, অফিসে আসেন, সাক্ষাতে কথা বলব।