সিঙ্গাপুরে নেয়ার অবস্থা নেই দগ্ধ মাদরাসাছাত্রী নুসরাতের : চিকিৎসক

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক : ফেনীর সোনাগাজীতে দগ্ধ মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেয়ার মতো শারীরিক অবস্থা নেই বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক চিকিৎসক সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, নুসরাতের অবস্থা এখনো উন্নতি হয়নি, ফলে তাকে এ অবস্থায় সিঙ্গাপুরে পাঠানো সম্ভব না।

৯ এপ্রিল সকাল ১০টায় তিনি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনের আগে নুসরাতের চিকিৎসার বিষয়ে সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলে তার মেডিকেল বোর্ড।

চিকিৎসক সামন্ত লাল সেন বলেন, আমরা সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেছি। আমরা তার অবস্থা জানিয়েছে। তারা বলেছে এই অবস্থায় তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়া সম্ভব না। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে নিতে অন্তত ৫ ঘণ্টা সময় প্রয়োজন। কিন্তু তার ওই কন্ডিশন নেই।

তিনি জানান, তারা আমাদের সাজেশন করেছেন। আমরা প্রতিনিয়ত রাফির চিকিৎসায় প্রতিবেদন তাদের দেখাবে। যখন অবস্থার উন্নতি হবে তখন আমরা সেখানে পাঠাবো।

এর আগে ফেনীতে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে গুরুতর আহতবস্থায় তাকে ৬ এপ্রিল বিকেল ৩টার দিকে তার স্বজনরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার অবস্থার আরো অবনতি হলে ৮ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়। গত তিন দিনেও তার অবস্থার উন্নতি না হলে লাইফ সাপোর্টে থাকা নুসরাত জাহানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।

৬ এপ্রিল ফেনীর পৌর শহরের সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রের ভিতর তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তার চিৎকারে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন দ্রুত তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠান।

এদিকে এ ঘটনায় করা মামলায় এখন পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মাদরাসার কারান্তরীণ অধ্যক্ষ এস এম সিরাজউদ্দৌলাকে মাদরাসা থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত ৭ এপ্রিল থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত মাদরাসাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

পরিবারের অভিযোগ, মাদরাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজউদ্দৌলা গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহানের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। নুসরাত বিষয়টি বাসায় জানালে তার মা সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সোনাগাজী থানা পুলিশ অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাকে গ্রেপ্তার করে।

এরপর মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দেয় সিরাজউদ্দৌলার লোকজন। কিন্তু নুসরাত অপারগতা প্রকাশ করেন। এ অবস্থায় আলিম পরীক্ষা শুরুর দিন থেকে ভাই নোমান নুসরাতকে পরীক্ষার হলে বসিয়ে দিয়ে আসতেন। এরইমধ্যে গেল শনিবার দুর্বৃত্তদের আগুনে ঝলসে যায় নুসরাতের শরীর। সূত্র : ডেইলি বাংলাদেশ