মাহমুদপুরে আগুনে ১১ দোকান ভস্মীভূত, পরিদর্শনে মির্জা আজম

মাহমুদপুর বাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের মালামাল। ছবি : বাংলারচিঠি ডটকম

মো. মুত্তাছিম বিল্লাহ, মেলান্দহ (জামালপুর) সংবাদদাতা
বাংলারচিঠি ডটকম

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১টি দোকান ভস্মীভূত হয়েছে। ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে মাহমুদপুর বাজারের যমুনা মার্কেটে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট প্রায় দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। অগ্নিকাণ্ডে অন্তত প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম ২২ ফেব্রুয়ারি সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ২১ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাহমুদপুর বাজারের ব্যবসায়ী শফিক আহমেদের সাদিয়া এন্টারপ্রাইজের সার ও কীটনাশকের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন মুহূর্তে পাশের দোকানগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে মেলান্দহ উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। এরপর ইসলামপুর ও মাদারগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের আরো দুটি ইউনিট নিয়ে জামালপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক প্রাণনাথ সাহা ঘটনাস্থলে যান। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে তারা আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।

এতে বাজারের একসারিতে থাকা ১১টি দোকান সম্পূর্ণরূপে ভস্মীভূত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য দোকানগুলো হলো- নজরুল ইসলামের মনির ট্রেডার্স নামের টিনের দোকান, মো. আলমগীর হোসেনের সার ও কীটনাশকের দোকান, সাদিকুল মোর্শেদের নোমান মোবাইল সেন্টার, মাসুদুর রহমানের সার ও কীটনাশকের দোকান, মো. গোলাম মোস্তফার পাটের গুদাম, আব্দুল মালেকের মালেক ডেকরেটর, ফোটো ঢালির ধানের গুদাম, বিপ্লবের সেলুন, শমসের আলীর চায়ের দোকান ও পাশের আরেকটি দোকান।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও বণিক সমিতির দাবি ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে দোকানঘরসহ অন্তত পক্ষে দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় মাহমুদপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবুল কাশেম বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, বাজারের ১১টি দোকান পুড়ে প্রায় ১ কোটি ৭ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য সংগ্রহ করেছি।

জামালপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক প্রাণনাথ সাহা বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আমাদের কর্মীরা তদন্ত করে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরুপণ এবং ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে কাজ করছেন।

মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তামিম আল ইয়ামিন বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, ফায়ার সার্ভিস যাওয়াতে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আশপাশের বেশ কয়েকটি দোকান আগুন থেকে রক্ষা পেয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক হিসাব এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে তদন্ত করে সঠিক ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরুপণ করতে বলেছি।

মাহমুদপুর বাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানপাট পরিদর্শন করেন সংসদ সদস্য মির্জা আজম। ছবি : মো. মুত্তাছিম বিল্লাহ

এদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম ২২ ফেব্রুয়ারি সকালে মাহমুদপুর বাজারে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তাসহ ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ তার সাথে ছিলেন। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি দোকান মালিককে নগদ ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।