
নিজস্ব প্রতিবেদক
জামালপুর, বাংলারচিঠি ডটকম
জামালপুর সদরের ইকোনোমিক জোন এলাকায় মাওলানা সা’দপন্থীদের ইজতেমা আয়োজন বন্ধের দাবিতে জামালপুরে গণজমায়েত, বিক্ষোভ মিছিল ও ডিসি অফিস ঘেরাও করে স্মারকলিপি দিয়েছে সা’দপন্থীদের তথাকথিত ইজতেমা প্রতিরোধ জামালপুর কমিটি।
২২ অক্টোবর সকাল নয়টায় জামালপুর শহরের পিটিআই মসজিদের সামনে জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এ গণজমায়েতের আয়োজন করা হয়। গণজমায়েতকে কেন্দ্র করে প্রধান সড়কে বেলা তিনটা পর্যন্ত কার্যত শহর অচল হয়ে পড়ে। প্রধান সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রী সাধারণের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।
জানা গেছে, মাওলানা সা’দপন্থী তাবলিগ জামাতের জামালপুরের আমির হাকিম মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে জামালপুর সদরের তিতপল্লা ইউনিয়নের ইকোনোমিক জোন মাঠে আগামী ১ নভেম্বর থেকে তিনদিনব্যাপী আঞ্চলিক ইজতেমার আয়োজন করছে। ইতিমধ্যে সেখানে ছামিয়ানা টাঙানোসহ যাবতীয় প্রস্তুতি কাজ চলমান রয়েছে।
এ নিয়ে জামালপুর মার্কাজ জামে মসজিদ কেন্দ্রিক তাবলিগ জামাতের শুরা কমিটির নেতৃত্বাধীন সারা জেলায় তাবলিগ জামাতের অনুসারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সা’দপন্থীদের ইজতেমা বন্ধ করার দাবিতে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শুরা কমিটির উদ্যোগে ২২ অক্টোবর সকাল নয়টায় শহরের পিটিআই জামে মসজিদের সামনে প্রধান সড়কে গণজমায়েতের আয়োজন করা হয়। সারা জেলা থেকে শুরা কমিটির হাজার হাজার অনুসারী এতে অংশ নেন।
সমাবেশ চলাকালে সদরের দিগপাইত, তিতপল্লাহসহ বিভিন্ন স্থানে শুরা কমিটির অনুসারীদের ট্রাকমিছিলে হামলা হয়। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন। গণজমায়েতে বক্তব্য রাখেন শুরা কমিটির পক্ষে মাওলানা আবুল কাশেম, মুফতি আব্দুল্লাহ, মুফতি মনিরুল ইসলাম, মাওলানা আমান উল্লাহ কাশেমী, মাওলানা মেরাজুর রহমান ও মুফতি শামছুদ্দিন।
পরে তারা মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে বেলা তিনটা পর্যন্ত প্রধান সড়কে বসে পড়ে অবস্থান নেয়। এতে ওই এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় শুরা কমিটির কয়েজন নেতা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ কবীর উদ্দীনের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে সা’দপন্থীদের ইজতেমা আয়োজন বন্ধ করার জোর দাবি জানান। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি গ্রহণ করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে শুরা কমিটির নেতারা তাদের আন্দোলনের দিনের কার্যক্রম স্থগিত করেন।
শুরা কমিটির সদস্য মাওলানা আবুল কাশেম বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, সা’দপন্থীরা দেশের কোথাও ইজতেমার আয়োজন করতে পারছে না। তারা কোরান ও হাদিসের অপব্যাখ্যা দিয়ে মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার অপচেষ্টা করছে। জামালপুরে তাদেরকে ইজতেমা আয়োজনের অনুমতি দেওয়ায় আমাদের অনুসারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ও স্মারকলিপি দিয়ে জামালপুরের ইজতেমা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছি। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে পরবর্তীতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।