
মাহমুদুল হাসান মুক্তা
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম
জামালপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক, দুর্নীতিবাজ আবু হান্নানের তাৎক্ষণিক বদলির দাবিতে সহকারী পরিচালকের অফিস ঘেরাও করেছেন হাসপাতালের নার্স ও কর্মচারীরা। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস সহকারী পরিচালকের।
২৪ আগস্ট শনিবার দুপুরে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের ভুক্তভোগী নার্স ও কর্মচারীরা প্রধান সহকারী আবু হান্নান, মুদ্রাক্ষরিক হাবিব ও স্টেনো টাইপিস্ট আব্দুল ওয়াদুদ খেদাও আন্দোলনে অংশ নেন।
আন্দোলনকরীরা জানান, মো. আবু হান্নান ২০০০ সালে জামালপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে অফিস সহকারী হিসেবে যোগদান করেন। ২০১০ সালে তার দূরসম্পর্কের মামা জামালপুর শহর আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতার ক্ষমতাকে ব্যবহার করে প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক বনে যায়। তারপর থেকেই হাসপাতালের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের কর্তৃত্ব চলে আসে তার হাতে। ডাক্তার ও কর্মচারীদের নানা সুযোগ সুবিধাদী, হাসপাতালের পণ্য ক্রয়-বিক্রয়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ ও আয়-ব্যয় নিয়ন্ত্রণে নেন। আর এসব খাত থেকে নানা ফাঁদ ও কৌশল সৃষ্টি করে, দুর্নীতিবাজদের নানা সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করে দিয়ে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। এসব দুর্নীতি ও অনিয়ম করে মাত্র ১৫ বছরে তিনি বনে গেছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। বর্তমানে তিনি জামালপুরের ইকবালপুরে বাড়ি, আমিনা জেনারেল হাসপাতালের সামনে ৫০ লক্ষাধিক টাকার জমি ও ঢাকার উত্তরায় বহুতল বাড়ির মালিক। রয়েছে ব্যবসা বাণিজ্য ও কিনেছেন আবাদী জমিও।
এছাড়া হান্নান ব্লাড ব্যাংকের আমিনুল ইসলাম, দর্জি মামুন, রেডিওলজিস্ট আবুল কালাম ও আলট্রাসোনোগ্রাফি বিভাগের আয়াকে নিয়ে সরকারি অর্থআত্মসাতের একটি চোরাচক্র তৈরি করেছিলেন। যারা ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে রোগীদের কাছ থেকে পরীক্ষার ফি আদায় করে সরকারকে ফাঁকি দিয়ে আত্মসাত করতেন।
তার এমন কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান তাকে শাস্তি স্বরূপ নেত্রকোনার খালিয়াজুড়িতে বদলী করেছিলেন। কিন্তু, তার ক্ষমতার খুঁটির জোরে সে কয়েক মাসের মাথায় আবার জামালপুরে চলে আসেন। শুধু তা-ই না শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের প্রধান সহকারীর দায়িত্ব নেন। এভাবে নানা সময় তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠলেও তিনি টাকা দিয়ে সবাইকে কিনে ফেলতেন। আর অভিযোগকারীদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আরও খড়গ জারি করতেন। তার গেঁড়াকল থেকে সহকারী পরিচালক ডা. আল আমিন, আরএমও ডা. শফিক, ডা. ফেরদৌস হাসান, ডা. কামরুজ্জামানসহ নার্স, কর্মকর্তা, সরকারি বেসরকারি কর্মচারী কেউ রেহাই পাননি।
এ ব্যাপারে ২৫০ শয্যা হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, আন্দোলনকারীদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।