জামালপুরে ব্রহ্মপুত্র সেতু থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা এক বাক প্রতিবন্ধীর

ব্রহ্মপুত্র সেতু থেকে লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত বাক প্রতিবন্ধী আফছানা। ছবি : মো. মুত্তাছিম বিল্লাহ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, জামালপুর ও মো. মুত্তাছিম বিল্লাহ, মেলান্দহ সংবাদদাতা
বাংলারচিঠিডটকম

বাক প্রতিবন্ধী মাতাল স্বামীর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে জামালপুরে ব্রহ্মপুত্র সেতু থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছে আফছানা নামের এক বাকপ্রতিবন্ধী বাল্যবধূ। ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সেতু এলাকার লোকজন তাকে উদ্ধার করে জামালপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ১৬ এপ্রিল তার সবরকম পরীক্ষা নিরীক্ষা করে শঙ্কা কেটে গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টার দিকে জামালপুর-শেরপুর সড়কের ব্রহ্মপুত্র নদের সেতু থেকে লাফ দিয়ে আনুমানিক ১৬ বছরের অজ্ঞাত এক কিশোরীকে নিচে পড়ে যেতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে তারা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত জামালপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে সে হাসপাতালের নিচতলায় মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

১৫ এপ্রিল রাতে মেয়েটির নাম পরিচয় জানতে চাইলে সে কাগজে তার নাম লিখে দেখায় ‘আফছানা’। বিবাহিত কিনা জানতে চাইলে তার স্বামীর নাম ‘রানা’ লিখে দেয়।

১৬ এপ্রিল সকালে জামালপুরের বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী স্কুলের একজন শিক্ষিকার সহায়তায় ইশারা ভাষায় তার সাথে কথা বলে জানা যায়, মেয়েটির নাম আফছানা। তার বাসা জামালপুর শহরের বাগেরহাটা বটতলা এলাকায়। সে বিবাহিত। তার স্বামী রানার বাসা জামালপুর শহরের কাছারিপাড়ায়। তাদের দেড় বছরের এক শিশু সন্তান রয়েছে। বৈশাখী জামা কাপড় কিনে না দেওয়ায় ১৫ এপ্রিল তার স্বামীর সাথে কয়েক দফা ঝগড়া হয়। ১৫ এপ্রিল বিকেলে রানা মাতাল অবস্থায় বাসায় ফিরে আফছানাকে বেধড়ক মারপিট করে। এক পর্যায়ে আফছানা তার শিশু সন্তানকে রেখেই বাসা থেকে কাঁদতে কাঁদতে ব্রহ্মপুত্র সেতুতে যায়। সেখানে কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে। এক পর্যায়ে আত্মহত্যার উদ্দেশে সেতু থেকে লাফ দিয়ে অন্তত ৬০ ফুট নিচে পড়ে যায়। স্থানীয় লোকজন তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাতেই জামালপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। একদিকে স্বামীর নির্যাতনের আঘাত, অপরদিকে লাফিয়ে পড়ে সে গুরুতর আহত হয়েছে।

জামালপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা চিকিৎসক মো. ফেরদৌস হাসান বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ‘১৫ এপ্রিল রাতে প্রতিবন্ধী মেয়েটি গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তার ডাক্তারি পরীক্ষাও করেছেন। মেয়েটি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে।’