ঢাকা ০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবস : জামালপুরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত এসএসসিতে জামালপুর সদরের ২৪০ কৃতী শিক্ষার্থী পেল সংবর্ধনা দেওয়ানগঞ্জে বর্ষালী ধানের বীজ রোপণে কৃষকদের সর্বনাশ ১২ সেপ্টেম্বর প্রথম সেমিফাইনালে লড়বে সরিষাবাড়ী ও মেলান্দহ উপজেলা দল শিক্ষার্থীদের গাছের চারা দিল শেরপুরের শাইন্ ও বার্ড ক্লাব গরুচুরির অপবাদে ট্রাকচালককে পিটিয়ে হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ দেওয়ানগঞ্জে সাত পুলিশ কর্মকর্তা পেল শ্রেষ্ঠ সম্মাননা শিশু ধর্ষণ মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বকশীগঞ্জে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তরা পেল ঢেউটিন, শুকনা খাবার বকশীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সংবাদ সম্মেলন

মাদারগঞ্জে কামারশালায় ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য, দা-ছুরি তৈরিতে ব্যস্ত কামার

মাদারগঞ্জ : কামারশালায় চলছে পশু কোরবানির মাংস কাটার যন্ত্রপাতি তৈরি ও বেচাবিক্রি। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

হাপড়ের বাতাসে কয়লার আগুনে জ¦লছে লোহা। কামারদের কপাল থেকে ঝরছে ঘাম। চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ। তবুও থেমে নেই তারা। সকাল পেরিয়ে রাত পর্যন্ত চলছে আগুনে পোড়া লাল লোহায় হাতুড়ি পেটানোর কাজ। তৈরি হচ্ছে দা, বটি, চাকু, ছুরি ও চাপাতিসহ নানান কামার সরঞ্জামাদি।

ঈদ যতই এগিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে কামার শিল্পীদের ব্যস্ততা। পবিত্র ঈদুল আজহা ঘিরে জামালপুরের মাদারগঞ্জের বিভিন্ন কামারশালায় দেখা যায় লোহার কারিগরদের কাজের এমন দৃশ্য।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারের কামারশালায় পশু জবাই, মাংস কাটা ও চামড়া ছড়ানোর পুরোনো সরঞ্জামাদি শান দেওয়া এবং নতুন দা, বটি, চাকু, ছুরি ও চাপাতি তৈরিতে ব্যস্ততা বেড়েছে কামার শিল্পীদের। মাংস কাটার এসব সরঞ্জামাদি তৈরির টুংটাং শব্দে মুখরিত প্রতিটি কামারশালা। দোকানগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পশু জবাইয়ের সরঞ্জামাদি তৈরি করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। আর এসব সরঞ্জামাদি কিনতে ক্রেতারাও ভিড় করছেন।

জানা গেছে, চলতি বছর পশুর চামড়া ছাড়ানোর ছুরি ১৫০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা, দা ৩০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা, বটি ৪০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা, পশু জবাইয়ের ছুরি ৫০০ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা এবং চাপাতি এক হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পাশাপাশি পুরোনো যন্ত্রপাতি শান দিতে ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে। তবে গত বছরের তুলনায় শ্রমিক মজুরি, কয়লা ও লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় এ বছর কামার সরঞ্জামাদির দামও অনেকক্ষেত্রে বেড়েছে।

কর্মকার সিরাজুল ইসলাম বলেন, কোরবানির ঈদের আয়-রোজগারের টাকায় সারাবছরের সংসার চলে। তাই পরিশ্রমকে পরিশ্রম মনে হয় না। প্রচন্ড গরমে ঘামে শরীর ভিজে গেলেও মনে হয় না কষ্ট হচ্ছে। কারিগর শহীদুল ইসলাম কর্মকার বলেন, ঈদ এলেই বেচাবিক্রি ও ব্যস্ততা বেড়ে যায় কামারদের। বছরের অন্যান্য সময় আমাদের ব্যবসা মন্দা যায়। এ ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে প্রণোদনাসহ সুযোগ-সুবিধা দরকার।

সাইফুল ইসলাম নামের একজন ক্রেতা বলেন, ঈদের এখনও বেশ কিছুদিন বাকি আছে। আগের ছুরি ও দা পুরনো হয়ে গেছে। যার জন্য নতুন কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু জিনিসের দাম বেশি হওয়ায় আপাতত পুরনো সরঞ্জামে শান দিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম খালেক এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৭১০ জনের অনলাইন জরিপ করে অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। কামার শিল্পীরাও এ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীভুক্ত। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের জন্য সরকার ভাতা ও সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি চালু করেছে। যদি কামার শিল্পীরা সুদমুক্ত ক্ষুদ্র ঋণের জন্য আবেদন করেন তাহলে তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবস : জামালপুরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

মাদারগঞ্জে কামারশালায় ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য, দা-ছুরি তৈরিতে ব্যস্ত কামার

আপডেট সময় ০৯:৩৯:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫

হাপড়ের বাতাসে কয়লার আগুনে জ¦লছে লোহা। কামারদের কপাল থেকে ঝরছে ঘাম। চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ। তবুও থেমে নেই তারা। সকাল পেরিয়ে রাত পর্যন্ত চলছে আগুনে পোড়া লাল লোহায় হাতুড়ি পেটানোর কাজ। তৈরি হচ্ছে দা, বটি, চাকু, ছুরি ও চাপাতিসহ নানান কামার সরঞ্জামাদি।

ঈদ যতই এগিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে কামার শিল্পীদের ব্যস্ততা। পবিত্র ঈদুল আজহা ঘিরে জামালপুরের মাদারগঞ্জের বিভিন্ন কামারশালায় দেখা যায় লোহার কারিগরদের কাজের এমন দৃশ্য।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারের কামারশালায় পশু জবাই, মাংস কাটা ও চামড়া ছড়ানোর পুরোনো সরঞ্জামাদি শান দেওয়া এবং নতুন দা, বটি, চাকু, ছুরি ও চাপাতি তৈরিতে ব্যস্ততা বেড়েছে কামার শিল্পীদের। মাংস কাটার এসব সরঞ্জামাদি তৈরির টুংটাং শব্দে মুখরিত প্রতিটি কামারশালা। দোকানগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পশু জবাইয়ের সরঞ্জামাদি তৈরি করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। আর এসব সরঞ্জামাদি কিনতে ক্রেতারাও ভিড় করছেন।

জানা গেছে, চলতি বছর পশুর চামড়া ছাড়ানোর ছুরি ১৫০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা, দা ৩০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা, বটি ৪০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা, পশু জবাইয়ের ছুরি ৫০০ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা এবং চাপাতি এক হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পাশাপাশি পুরোনো যন্ত্রপাতি শান দিতে ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে। তবে গত বছরের তুলনায় শ্রমিক মজুরি, কয়লা ও লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় এ বছর কামার সরঞ্জামাদির দামও অনেকক্ষেত্রে বেড়েছে।

কর্মকার সিরাজুল ইসলাম বলেন, কোরবানির ঈদের আয়-রোজগারের টাকায় সারাবছরের সংসার চলে। তাই পরিশ্রমকে পরিশ্রম মনে হয় না। প্রচন্ড গরমে ঘামে শরীর ভিজে গেলেও মনে হয় না কষ্ট হচ্ছে। কারিগর শহীদুল ইসলাম কর্মকার বলেন, ঈদ এলেই বেচাবিক্রি ও ব্যস্ততা বেড়ে যায় কামারদের। বছরের অন্যান্য সময় আমাদের ব্যবসা মন্দা যায়। এ ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে প্রণোদনাসহ সুযোগ-সুবিধা দরকার।

সাইফুল ইসলাম নামের একজন ক্রেতা বলেন, ঈদের এখনও বেশ কিছুদিন বাকি আছে। আগের ছুরি ও দা পুরনো হয়ে গেছে। যার জন্য নতুন কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু জিনিসের দাম বেশি হওয়ায় আপাতত পুরনো সরঞ্জামে শান দিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম খালেক এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৭১০ জনের অনলাইন জরিপ করে অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। কামার শিল্পীরাও এ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীভুক্ত। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের জন্য সরকার ভাতা ও সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি চালু করেছে। যদি কামার শিল্পীরা সুদমুক্ত ক্ষুদ্র ঋণের জন্য আবেদন করেন তাহলে তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে।