বকশীগঞ্জে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ২০ মণ ওজনের রাজা বাবু

নিজের সন্তানের চেয়েও রাজা বাবুকে বেশি যত্ন করেন সুফিয়া বেগম। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

জিএম ফাতিউল হাফিজ বাবু
নিজস্ব প্রতিবেদক, বকশীগঞ্জ, বাংলারচিঠিডটকম:

আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে জামালপুরের বকশীগঞ্জে কোরবানির মাঠ কাঁপাবেন ২০ মণ ওজনের রাজা বাবু।

যতই দিন ঘনিয়ে আসছে ততই রাজা বাবুর হাঁকডাক বেড়েই চলছে। আগামী কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে রাজা বাবুকে।

কাঠমিস্ত্রী রফিক ও সুফিয়া দম্পতির তিন বছরের চেষ্টায় কোরবানির জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েছে এই পশুটি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জামালপুরের বকশীগঞ্জ পৌর এলাকার পাখিমারা গ্রামে তিন বছর আগে নিজের ব্রাহমা জাতের গাভীর একটি ষাড় বাছুর কোরবানির জন্য লালন-পালন শুরু করেন কাঠমিস্ত্রী রফিকুল ইসলাম। রফিকুল ইসলাম সারাদিন কাজে ব্যস্ত থাকায় বাছুরটি সযত্নে বড় করেন তার স্ত্রী সুফিয়া বেগম। তিলে তিলে বড় করা সেই বাছুরটির নাম দেওয়া হয় রাজা বাবু। এই দম্পতি পরম আদরে নিজের সন্তানের মত যত্ন নেন রাজা বাবুর।

তিন বছর পর সেই বাছুরটি এখন সত্যিকারের রাজা বাবুতে পরিণত হয়েছে। সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার খাওয়ানো হয় রাজা বাবুকে।

রাজা বাবুকে প্রস্তুত করতে নিজের জমিতে ঘাসের চাষও করেছেন রফিকুল ইসলাম। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের পরামর্শে কাঁচা ঘাস, ভুসি, চালের খুদ খাওয়ানো হয় পশুটিকে।

প্রতিদিন গোসল করানোসহ নিজের সন্তানের চেয়েও রাজা বাবুকে বেশি যত্ন করেন এই দম্পতি। দীর্ঘ তিন বছর পর রাজা বাবুর ওজন দাঁড়িয়েছে এবার ২০ মণে।

আগামী কোরবানিতে রাজা বাবুর দাম হাঁকাচ্ছেন ১২ লাখ টাকা। রাজা বাবুকে কিনতে ইতোমধ্যেই স্থানীয় পাইকাররা আসছেন পাখিমারা গ্রামে।

তবে সন্তোষজনক দাম পেলেই গরুটি বিক্রির কথা জানিয়েছেন গরুটির মালিক রফিকুল ইসলাম। এজন্য দূর-দূরান্তের পাইকারদের পাখিমারা গ্রামে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন রফিকুল ইসলাম।

স্থানীয় গ্রামবাসী জানান, রফিক ও তার স্ত্রী নিজের গাভীর বাছুর থেকে কোরবানি যোগ্য করে তুলেছেন রাজা বাবুকে। বকশীগঞ্জ উপজেলায় রাজা বাবুর চেয়ে বড় কোরবানির জন্য বড় কোন পশু নেই। রফিক-সুফিয়া দম্পতি যেভাবে গরুটিকে লালন-পালন করেছেন তা সত্যিই অনুকরণীয়। তাই দূর-দূরান্তের ক্রেতাদের আসার অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

গরুর মালিক রফিকুল ইসলামের স্ত্রী সুফিয়া বেগম বলেন, আমি নিজের দুজন সন্তানকে যেভাবে মানুষ করছি। সেই ভাবেই রাজা বাবুকে বড় করে তুলেছি। নিজে না খেয়ে রাজা বাবুকে দেশীয় খাবার কিনে খাইয়েছি। তবে রাজা বাবুকে বিক্রির কথা বলতেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সুফিয়া বেগম।

গরুর মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে গরুটিকে বড় করেছি। কোরবানির জন্য যেহেতু বিক্রি করা হবে তাই কোন ধরনের ইঞ্জেকশন বা মোটা তাজাকরণের ওষুধ ব্যবহার করা হয় নি। নিয়মিত খাবার দেওয়াসহ পরিচর্যার কারণে রাজা বাবুর ওজন হয়েছে ২০ মণ।

স্থানীয়ভাবে হাজার হাজার পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বকশীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে যেন অবৈধভাবে কোন গরু বাংলাদেশে না ঢুকে সেদিকে প্রশাসনের নজরদারী চেয়েছেন স্থানীয় খামারীরা।